বাগদা : গ্রামের নাম মামাভাগ্নে। আর এখানেই এবার চন্দনের (Chandan Mondal) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তাঁর ‘ভাগ্নে’। বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন অনুপ ঘোষ নামে এক তৃণমূল (Trinamool Congress) কর্মীও। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে বাগদার চন্দন মণ্ডলের গ্রেফতারির পর থেকেই মুখ খুলতে শুরু করেছেন মামা-ভাগ্নে গ্রামের বাসিন্দারা। ফাঁস হয়ে যাচ্ছে ‘সৎ’ রঞ্জনের একাধিক ‘অসৎ’ কীর্তি। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে চিন্তার ভাঁজও চওড়া হচ্ছে গ্রামের অনেক বাসিন্দারই। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই এই এলাকাতে গ্রুপ-ডি তে সাত থেকে আট জনের চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে। বাতিলের তালিকাতে আরও ২০ থেকে ২৫ জন রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতে দাঁড়িয়ে বাগদার চন্দন প্রসঙ্গে বিস্ফোরক অভিযোগ করতে শোনা গেল এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তথা মামাভাগ্নে গ্রামের তৃণমূল-কংগ্রেসের কর্মী অনুপ ঘোষ। তাঁর দাবি, এলাকার ১০০ জনকে টাকার বিনিময়ে চাকরি দিয়েছেন চন্দন। ৮ পাশ ছেলেমেয়েদেরও টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন তিনি। এমনকী সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি দেওয়া হতো বলেও দাবি করেছেন তিনি। একাধিক প্রভাবশালী লোকের চন্দনের বাড়িতে যাতায়াত ছিল বলে দাবি তাঁর। দুর্নীতি কোটি কোটি টাকা বস্তা করে গিয়েছে গ্রাম থেকে।
অন্যদিকে আরও এক বিস্ফোরক অভিযোগ করতে দেখা গিয়েছে গ্রামের আর এক বাসিন্দা অরবিন্দ বিশ্বাসকে। তিনি আবার নিজেকে চন্দন মণ্ডলের ভাগ্নে বলেও দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, তাঁর বাড়ির ৫ জনকে চাকরি দেওয়ার নাম করে ৪৪ লক্ষ টাকা নিয়েছেন চন্দন। তিনি বলেন, “আমার বাড়ি থেকে ৪৪ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। ৫ জনের চাকরি করে দেবে বলেই এই টাকা নিয়েছিল। প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি, ডি-গ্রুপ সব কিছুতে চাকরি করে দেবে বলেছিল। চন্দন সম্পর্কে আমার মামা হয়। ওর বাড়ির পাশে আমার বাড়ি। বিশ্বাস করেই ওকে টাকা দিয়েছিলাম। এখন চাকরি পাইনি। টাকাও পাইনি।”
একইসঙ্গে অনুপ ঘোষের স্পষ্ট দাবি, চন্দনের ফোঁটা সবাই নিয়েছেন। মমতার বাড়িতে যত লোকের ভিড় হয় তাঁর থেকে অনেক বেশি ভিড় শুধু চন্দনের বাড়িতে হত। তাঁর সাফ দাবি, “শুধুমাত্র মামাভাগ্নে এলাকাতেই একশোর বেশি লোককে চাকরি করে দিয়েছে। সব টাকার বিনিময়ে চাকরি হয়েছে। এমনকী মমতার বাড়িতে যত লোকের না ভিড় হয় তাঁর থেকে বেশি ভিড় আমাদের গ্রামে চন্দনের বাড়ির সামনে হত। সব চাকরির জন্য। থানার বড়বাবু, বিডিও, সবাই সব জানে। এই এলাকার যত বড় বড় চাকরি হয়েছে, যত প্রভাবশালী লোক রয়েছে সবাই ওখানে গিয়েছে। চন্দনের ফোঁটা সবাই নিয়েছে। কেউ বাকি নেই চন্দনের ফোঁটা নিতে। শুধু যায়নি গরিব মানুষরা।”