দমদম: রাজ্যে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একজনের জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত বিভিন্ন আর্থিক সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। আর্থিক সাহায্য় রয়েছে মৃত্যুর পরেও। কোনও পরিবারের কেউ মারা গেলে, সেই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে রয়েছে সমব্যথী প্রকল্প (Samabyathi Scheme)। শোকার্ত পরিবারকে প্রিয়জনের শেষকৃত্যের জন্য এককালীন দুই হাজার টাকা দেওয়া হয় এই প্রকল্পের আওতায়। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বিভিন্ন সভা-সমাবেশে এই সমব্যথী প্রকল্পের সুবিধার কথা বার বার বলে এসেছেন। কিন্তু তারপরও দক্ষিণ দমদম পুরসভায় (South Dumdum Municipality) দেখা গেল এক ভিন্ন চিত্র। সমব্যথী প্রকল্পের টাকা পেতে গিয়ে নাজেহাল হতে হচ্ছে দক্ষিণ দমদম পুরসভার এক পরিবারকে। এমনই অভিযোগ তুললেন দমদম লাহা বাগানের বাসিন্দা দিলীপ ঘোষ।
সমব্যথী প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য বারংবার পুরসভার দ্বারস্থ হয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলছেন দিলীপবাবু। সামান্য কিছু আয়ে সংসার চলে দমদমের লাহাবাগানের বাসিন্দা দিলীপ ঘোষের। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। সবজি বিক্রি করে যেটুকু আয় হয়, তা দিয়েই সংসার চলে কোনওমতে। সম্প্রতি তাঁর মা প্রয়াত হয়েছেন। এমন অবস্থায় গায়ে কাছা জড়িয়ে ঘুরে বেরাতে হচ্ছে পুরসভার দুয়ারে দুয়ারে। কিন্তু দিলীপবাবুর অভিযোগ, পুরসভার থেকে তাঁকে ফিরিয়ে দিচ্ছে। বলা হচ্ছে, এখন ফান্ড নেই, তাই টাকা দেওয়া সম্ভব হবে না। এই কারণ দেখিয়ে তাঁকে সোম-মঙ্গল যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে এই সমস্যার কথা দিলীপবাবু জানিয়েছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। দেবাশিসবাবু তাঁকে আবারও পুরসভায় পাঠান। সেই মতো পুরসভায় গিয়ে সমব্যথী প্রকল্পের আবেদনপত্র জমা দেন তিনি। কিন্তু তারপর থেকে এখনও টাকা মেলেনি। কাউন্সিলর দেবাশিসবাবুকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ‘আমাদের নতুন বোর্ড হওয়ার পর থেকেই কোনও উন্নয়নের কাজ দেখতে পাচ্ছি না। ওই ব্যক্তি পুরসভায় গিয়েছিল। দুই-তিন ধরে ফিরে আসছে। আমি বিষয়টি মন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে জানিয়েছিলাম। উনি পাঁচ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন, যাতে ওই ব্যক্তি তাঁর মায়ের কাজ ঠিকভাবে করতে পারেন।’ ব্রাত্য বসুর পাঠানো সেই সাহায্য ইতিমধ্যেই হাতে পেয়েছেন ওই ব্যক্তি। তবে এই গোটা ঘটনা নিয়ে দক্ষিণ দমদম পুরসভার পুরপ্রধান কস্তুরী চৌধুরীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।