North 24 Parganas: ‘আমার বউকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না,’ স্ত্রীকে পেতে নার্সিংহোমের সামনে ধরনায় বসলেন স্বামী

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Oct 02, 2021 | 3:00 PM

Hasnabad: বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ থানার ভেবিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের কোন্নগর গ্রাম। এ গ্রামেরই যুবক বছর পঁচিশের নকুল মণ্ডল পেশায় রাজমিস্ত্রী। কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে থাকেন তিনি।

North 24 Parganas: আমার বউকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না, স্ত্রীকে পেতে নার্সিংহোমের সামনে ধরনায় বসলেন স্বামী
স্ত্রী-কন্যাকে বাড়ি নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর নকুল মণ্ডল। নিজস্ব ছবি।

Follow Us

উত্তর ২৪ পরগনা: স্ত্রী, সদ্যোজাত কন্যা সন্তানকে নিজের সঙ্গেই রাখতে বদ্ধপরিকর যুবক। মেয়ের জন্মের পর থেকে তাই হত্যে দিয়ে পড়ে রয়েছেন নার্সিংহোমের সামনে। অন্যদিকে ওই যুবকের শাশুড়ির অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে জামাই নিয়মিত মারধর করে, বিক্রি করে দেওয়ার হুমকিও দেয়। তাই কিছুতেই তিনি ওই ছেলের হাতে আর মেয়েকে ছাড়বেন না। এই ঘটনা ঘিরে শনিবার সকাল থেকেই হইচই হাসনাবাদের (Hasnabad) ভেবিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের কোন্নগরে।

বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ থানার ভেবিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের কোন্নগর গ্রাম। এ গ্রামেরই যুবক বছর পঁচিশের নকুল মণ্ডল পেশায় রাজমিস্ত্রী। কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে থাকেন তিনি। তাঁর স্ত্রী টিনা মণ্ডল। তাঁদের একটি পাঁচ বছরের পুত্র সন্তানও রয়েছে। কোভিডের কারণে লকডাউন হয়ে যায় বাণিজ্য নগরী মুম্বইয়ে। হাতে তেমন কাজ ছিল না নকুলের। এরমধ্যে সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে দেখাশোনার সমস্যা। এরপরই গ্রামে ফিরে আসেন টিনা। গত ২৭ সেপ্টেম্বর নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানেই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।

এদিকে শনিবার মেয়েকে নিয়ে যেতে নার্সিংহোমে যান টিনার মা স্বপ্না বিবি। এরপরই জামাই-শাশুড়ির মধ্যে তুমুল বাকযুদ্ধ শুরু হয়। নার্সিংহোমের সামনে এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেন। যদিও পুলিশ মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।

টিনার মা স্বপ্না বিবির বক্তব্য,  “আমার মেয়ে প্রেম করেই বিয়ে করেছিল। জামাই কাজের সূত্রে মুম্বই থাকে। মেয়েকেও ওখানে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে নিয়ে গিয়ে আমার মেয়েকে মানসিক, শারীরিক অত্যাচার করে। হুমকি দেয়, বিড়ি-সিগারেটের ছ্যাঁকা দেয়। খুব নেশা করে। মেয়ে প্রতিবাদ করায় ওকে বলে বিক্রি করে দেবে। মেয়েটার বাচ্চা হবে, অথচ ওকে দিয়ে চার বাড়ি কাজও করাত। আমি অনেক চেষ্টা করে বুঝিয়ে মেয়েটাকে এখানে আনাই। এর মধ্যে ওর বাচ্চা হবে, তাই নার্সিংহোমেও ভর্তি করাই। এবার মেয়ে হয়েছে। এর পর আরও হুমকি দেওয়া শুরু করেছে। বলছে আমাকেও মারবে, আমার মেয়েকেও খুন করবে। বলছে, ‘বউকে বম্বে নিয়েই যাব। দেখি তোর কী করার ক্ষমতা আছে, করে নিস। এখানকার পুলিশ আমাকে কিছুই করতে পারবে না’। এরপরই আমি পুলিশকে জানানোর কথা বলি। ও আমাকে পাল্টা হুমকি দিচ্ছে।”

স্বপ্না বিবির আরও অভিযোগ, “ও তিন তিনটে মেয়ের জীবন বরবাদ করে দিয়েছে। সব আমার কাছে প্রমাণ আছে। আমার মেয়েকে ভয় দেখিয়ে, চাপ দিয়ে বলাচ্ছে ওর সঙ্গে যাবে। এদিকে মেয়ে কাঁদছে আর বলছে মা আমাকে বাঁচাও। ওর শাশুড়িও অত্যাচার করে।”

এদিকে অভিযুক্ত জামাই নকুল মণ্ডল বলেন, “আমার স্ত্রী, আমার বাচ্চাকে আমি যেখানে কাজ করি মুম্বই, সেখানে নিয়ে যেতে চাই। ওদের আমার কাছ থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। আমি এই নার্সিংহোমের সামনেই বসে থাকব। শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে। আমি আমার বউয়ের উপর কোনও রকম অত্যাচার করি না। আমি কী করি, তা তো আমার বউ বলতে পারবে! ওকেই জিজ্ঞাসা করে দেখুন। আমি যদি অন্যায় করি আমার শাস্তি হোক। আমি মেনে নেব। আর বাড়িতে ঝামেলা হয় তো। আমার মায়ের সঙ্গে বউয়ের ঝামেলা হয়েছে। আমি ছিলাম না। ফিরে এসে সব শুনে আমি মাকে বলেওছি। এর মধ্যে আমার কী দোষ? ওরা যে বলছে দেড় মাস ধরে…। এই তো গত মাসের ৫ তারিখে দিতে এসেছি। ২৭ তারিখ আবার ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে আমার কী ভুলটা হল? আমার আগে ছেলে আছে। এবার মেয়ে হয়েছে। আমি তো ওকে না নিয়ে কিছুতেই যাব না।”

যদিও এ নিয়ে টিনা মণ্ডল কিছু বলতে চাননি। এখনও তিনি সুস্থ নন তাই এ বিষয়ে কথা বলবেন না। সুস্থ হলে সিদ্ধান্ত নেবেন মুম্বইয়ে ফিরবেন নাকি মিনাখাঁর সুলতানপুরে মায়ের কাছে চলে যাবেন।

আরও পড়ুন: Kolkata Metro: দেওয়া হবে না টোকেন, তবে ‘পুজো স্পেশাল’ যাত্রীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা মেট্রোয়

Next Article