পানিহাটি: প্রায় দু’মাস হয়েছে বিয়ে হয়েছে ওঁদের। বিয়ের পর থেকেই অশান্তি চলছিল স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। কিন্তু তার ফল যে এমন হবে কেউ হয়ত ভাবেননি! একটানা ষোলো দিন ধরে প্রিন্টিং ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল তাঁরই শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনায় খড়দহ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ জানানোর পরও কোনও পদক্ষেপ করেনি থানা, এমনটাও অভিযোগ তুলেছে ওই ব্যবসায়ীর পরিবার।
কী ঘটেছে?
গত ১৩ মার্চ হুগলির উত্তরপাড়ার পূজা রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয় পানিহাটি পুরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের নেতাজি সুভাষ রোডের বাসিন্দা শুভজ্যোতি বোসের। শুভজ্যোতি পরিবারের দাবি, বিয়ের সাত দিন পরেই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে তাঁর দিদির সঙ্গে হুগলি উত্তরপাড়ায় চলে যান পূজা। অনেক দিন হয়ে যাওয়ার পরও পূজা বাড়ি না ফেরায় শুভজ্যোতি ফোন করেন তাঁকে। ওই পরিবারের আরও দাবি, এরপর গত মাসে অর্থাৎ ১ এপ্রিল শুভজ্যোতিকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা ফোন করে ডেকে পাঠান। সেই মতোই শুভজ্যোতি বাড়িতে বলেন যে তিনি শ্বশুরবাড়ি উত্তরপাড়ায় যাচ্ছেন। একদিন সেখানে থেকে পরের দিনই বাড়িতে ফিরবেন।
অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট দিনে বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা শুভজ্যোতিকে ফোন করেন। কিন্তু ছেলের ফোন সুইচ অফ বলায় চিন্তা হয় তাঁদের। এ দিকে, পূজার বাড়িতে ফোন করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি বলে খবর। এরপর ৬ তারিখ শুভজ্যোতি তাঁর বাড়িতে ফোন করে জানায়, তাঁকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন আটকে রেখে অত্যাচার করছে। সে ভাল নেই। এমনটাই জানিয়েছেন শুভজ্যোতি বোসের বাবা।
এরপরই খড়দহ থানায় শুভজ্যোতি বোসের পরিবারের লোকজন অভিযোগ দায়ের করেন। পরপর তিন বার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু ষোলো দিন কেটে গেলেও খড়দহ থানার পুলিশ কোনও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেনি বলে অভিযোগ পরিবারের লোকজন। মঙ্গলবার পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে শুভজ্যোতি বোসের বাড়ির সামনে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের সাফ দাবি, খড়দহ থানার পুলিশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করে শুভজ্যোতি বোসকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসুক। এবং যাঁরা তাঁকে আটকে রেখে অত্যাচার করছে অর্থাৎ পূজার বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক। এ দিকে, ১৬ দিন ধরে ছেলেকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন শুভজ্যোতি বোসের বাবা-মা সহ পরিবারের লোকজন। এ বিষয়ে পূজার পরিবারের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।