বসিরহাট: মণিপুরের ভয়াবহ ধসে এখনও পর্যন্ত ১৪ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। এখনও নিখোঁজ অনেকে। বৃষ্টি আর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় উদ্ধারকাজ চালানোও কঠিন হয়ে উঠছে। বাংলার অন্তত পাঁচ বাসিন্দার মৃত্যুর খবর এসেছে ইতিমধ্যেই। তাই দু দিন ধরে খোঁজ না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে বসিরহাটের সেনা জওয়ানের পরিবারের। শেখ মহিউদ্দিনের সঙ্গে শেষ বার তাঁর স্ত্রীর কথা হয়েছিল বুধবার। তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ নেই। যাঁদের আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যেও নেই মহিউদ্দিন। সুস্থভাবে বাড়ি ফিরবে আসবে তো? একটাই চিন্তা পরিবারের।
বসিরহাটের মাটিয়া থানার ঘোড়ারাস কুলিনগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোড়ারাস উত্তরপাড়ার বাসিন্দা শেখ মহিউদ্দিন। বছর ৩২- এর শেখ মহিউদ্দিন গত ৯ বছর ধরে ১০৭ টেরিটোরিয়াল আর্মির গোর্খা রেজিমেন্টের সদস্য। ২০২১ সালের ১৬ অগস্ট শেষবার ঘোড়ারাস উত্তরপাড়ার বাড়িতে ছুটিতে এসেছিলেন তিনি। তারপরে আবার কাজে ফিরে যান মণিপুরে। গত প্রায় ১১ মাস ধরে সেখানেই রয়েছেন।
নিখোঁজ জওয়ানের স্ত্রী রিমানা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, বুধবার শেষ স্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর। ইদের আগে বাড়ি ফিরবেন বলেছিলেন। এরপর থেকে আর কোনও খোঁজ নেই। ধসের কথা তাঁকে জানাননি কেউ। শুক্রবার সকালে ধসের কথা জানতে পেরেছেন তিনি। আর তারপর থেকেই দুশ্চিন্তায় প্রহর গুণছেন রিমানা। জানালেন, কথা বলার মতো অবস্থায় নেই তিনি। তিনি এখন চাইছেন তাঁর স্বামী যেন সুস্থভাবে বাড়ি ফিরে আসেন।
বুধবার রাত ১২ টা নাগাদ ধস নামে। মণিপুরের ননে জেলার টুপুল রেলইয়ার্ড ক্যাম্পে সেই সময় ৪৩ জন সেনা জওয়ান ছিল। সেখানে রেললাইন পাতার কাজ চলছিল। অতিরিক্ত বৃষ্টির জেরে হঠাৎই রেল ইয়ার্ডের কাছে ধস নামলে নিখোঁজ হয়ে যান অনেকে। বসিরহাটের শেখ মহিউদ্দিনের কোনও খোঁজ নেই। শেখ মহিউদ্দিনের আর এক ভাই শেখ মিরাজুদ্দিনও একই রেজিমেন্টের সেনা জওয়ান। তিনি এখন ছুটিতে রয়েছেন বাড়িতে। সকলেই চাইছেন মহিউদ্দিন যেন সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসেন। সবাই সারাদিন ধরে চোখ রেখেছেন টিভির পর্দায়।