রায়গঞ্জ: গত কয়েকদিন ধরেই অজানা জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার উদ্বেগজন ছবি আসছে উত্তরবঙ্গ থেকে। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারের বিভিন্ন অঞ্চলে জ্বর ও পেটে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি বহু শিশু। এবার সেই আতঙ্কই ছড়াল উত্তর দিনাজপুরে (North Dinajpur)। জ্বরে (Mystery Fever) আক্রান্ত হয়ে রায়গঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি অন্তত ১৬ জন শিশু। প্রায় প্রত্যেকেরই রয়েছে জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট। কারও আরও পেটে ব্যাথাও হচ্ছে।
কয়েকদিন ধরেই রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে জ্বর সহ আরও কিছু উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হচ্ছিল বেশ কয়েকজন শিশু। মঙ্গলবার থেকে সংখ্যাটা বাড়তে শুরু করেছে। এ দিন রাতেও বেশ কয়েকজন শিশুকে জ্বর থাকায় মেডিক্যালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের শিশু বিভাগে ভর্তি করা হয়। মেডিক্যাল কলেজ সুত্রের খবর, এমন আক্রান্তের সংখ্যা মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় ১৬জন জ্বরে আক্রান্ত শিশু মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে এই জ্বর আসলে কী কারণে হচ্ছে, তা জানা যায়নি।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ, ইটাহার, হেমতাবাদ ব্লক সহ দক্ষিন দিনাজপুরেরও বেশ কয়েকটি গ্রামাঞ্চলের জ্বরে আক্রান্ত শিশুরা চিকিৎসাধীন রায়গঞ্জ মেডিকয়ালে। আচমকা এত জন শিশু জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়ায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যেও। তবে চিকিৎসাধীন শিশুদের শারিরিক অবস্থা অনেকটাই স্বস্তিজনক বলে জানিয়েছেন শিশুদের আত্মীয়রা। আবজাল আলি নামে এক ব্যক্তি জানান, তাঁর নাতনির বয়স ৫২ দিন। চার দিন আগে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ওই শিশুকে। জ্বরের সঙ্গে সর্দি, কাশির মতো উপসর্গ ছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি। আর এক আক্রান্ত শিশু আমিরুত শেখ জানান, শিশুর জ্বর আসায় তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। জ্বরের ওযুধও দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু ওষুধ খাওয়ালে ১ থেকে দেড় ঘণ্টা সুস্থ থাকছে শিশু। তারপর আবার জ্বর। তাই তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাকেও।
গত ১২ থেকে ১৪ দিন ধরে এই অজানা জ্বরের প্রকোপ বেড়ে চলেছে উত্তরবঙ্গে। এখনও পর্যন্ত তিন শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ৫০০-র বেশি শিশু, এদের মধ্যে ৫০ জনের অবস্থা গুরুতর। উত্তরবঙ্গের চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, সঠিকভাবে সেই তথ্য জানানো হয়নি স্বাস্থ্য ভবনকে। তথ্য ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। জ্বর, পেটে যন্ত্রণা, শ্বাসকষ্ট নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে বহু শিশু। উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে এই অজানা জ্বর। অথচ ১০-১২ দিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করে সঠিক কারণ জানা গেল না। কেন জ্বরের কারণ জানতে এত বেশি সময় লাগছে? সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ।
আরও পড়ুন: শীতের মুখেই ফের আছড়ে পড়তে পারে ডেল্টার ঢেউ! কবে পিছু ছাড়বে করোনা, তা নিয়েও সংশয়ে বিশেষজ্ঞরা