উত্তর ২৪ পরগনা: কাউকে চাকরি দেওয়ার নাম করে, কাউকে লোন করিয়ে দেওয়ার নামে, কাউকে আবার মোটা টাকার সুদ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা তুলেছিলেন কয়েক বছর ধরে। কিন্তু যখনই টাকা ফেরত দেওয়ার সময় এসেছে, নানান অজুহাত দেখিয়ে ঘুরিয়েছেন সকলকে। এরকম কয়েকশো মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে নৈহাটির এক দম্পতির বিরুদ্ধে। ২০ মে নৈহাটি থানায় বেশ কয়েকটি অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ ছানবিন শুরু করার আগেই গায়েব হয়ে গিয়েছিলেন ওই দম্পতি। অবশেষে বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁদের। কোটি কোটি টাকা প্রতারণায় অভিযুক্ত দম্পতিকে বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করল নৈহাটি থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম বিশ্বজিৎ মজুমদার ও সোমাশ্রী লাহিড়ি। তাঁরা নৈহাটির অরবিন্দপল্লির বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দম্পতি বেশ কয়েক বছর ধরে এলাকায় প্রতারণার জাল বিছিয়েছিলেন। বিশ্বজিৎ তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা বাড়িতে থাকতেন। মায়ের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না। অভিযোগ, পাড়ার প্রতিবেশী, আশপাশের এলাকার অনেকের কাছ থেকেই এক-এক রকমের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকা তাঁরা তুলেছিলেন। স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই এই চক্র চালাতেন।
এক প্রতারিত মহিলা বলেন, “আমার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়েছিল। আমাদের বলেছিল মোটা সুদ দেবে। আমি ভেবেছিলাম বাড়ি বেঁচে চার পাঁচ লক্ষ টাকা দেব, ভাগ্যিস বিক্রি করিনি। ওদের বর-বউয়ের কঠিন শাস্তি চাই।”
আরেক মহিলা বলেন, “আমার দুই ছেলে ১০-১২ লক্ষ টাকা দিয়েছে। ভয়ে তো প্রথমে আমাদের কিছু বলছিলই না। এমনও পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যে সুইসাইড পর্যন্ত করতে গিয়েছিল ওরা।”
ছেলের কঠিন শাস্তি চেয়েছেন বিশ্বজিতের মা। তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে ছেলের কোনই সম্পর্ক ছিল না। আমার খোঁজ খবরও নিত না। বলতেই পারছি না, ওই টাকা দিয়ে ওরা কী করত। শুধু শুনেছি পুলিশ ওদের বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করেছে।”
কোটি কোটি টাকা আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে নৈহাটি অরবিন্দপল্লি এলাকার এক দম্পতিকে গ্রেফতার করল নৈহাটি থানার পুলিশ। বিশ্বজিৎ মজুমদার ও সোমাশ্রী লাহিড়ী মজুমদার নামে ধৃত দম্পতিকে ব্যারাকপুর আদালতে পাঠালো নৈহাটি পুলিশ।বহু মানুষদের কাছ থেকে নানা আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করতো। কাউকে লোন পাইয়ে দেবার নাম করে, আবার কাউকে চাকরি পাইয়ের দেওয়ার নাম করে,আবার কাউকে মোটা টাকার সুদ দেওয়ার নাম করে কোটি-কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। আর তাদের টাকা না দিয়ে গত ২০ মে ২০২৩ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপর নৈহাটি থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর প্রায় তিন মাস পর ব্যঙ্গালোর থেকে অভিযুক্ত দম্পতিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।