উত্তর ২৪ পরগনা: দেখতে ঠিক বাঘেরই মতো। আকারও বেশ বড়। অন্ধকারে চকচকে গায়ে স্পষ্টত কালো ডোরা কাটা দাগ। এমন পশু আচমকাই লোকালয়ে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাসিন্দারা। বেশ বড় আকারের বাঘরোল ঘিরে আতঙ্ক ছড়াল সোদপুর নাটাগর এলাকায়। এখনও পর্যন্ত ওই প্রাণীর হামলায় এক জন স্থানীয় বাসিন্দা আহতও হয়েছেন বলে খবর।
বুধবার রাতে সোদপুর নাটাগর এলাকায় বাঘের মতো দেখতে এক প্রাণীকে ঘিরে এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নাটাগড়েরই এক বাসিন্দার বাড়ির পাঁচিলের পিছনে ঝোপের মধ্যে ছিল প্রাণীটি। কিছু আওয়াজ শুনে ওই ব্যক্তি টর্চের আলো ফেলতেই কালো ডোরা কাটা দাগ দেখতে পান। তাঁর চিৎকারেই জড়ো হয়ে যান অন্যান্য বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা রীতিমতো হাতে বাঁশ,লাঠি নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। ওই প্রাণীটিও আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে থাকেন। বাঘের মতো দেখতে এই প্রাণীকে ঘিরে এলাকার মানুষের মধ্যে শোরগোল পড়ে যায়। প্রাণীটিও দৌড়াদৌড়ি করতে থাকে। তখনই এক স্থানীয় বাসিন্দা আহত হন।
খবর দেওয়া হয় বনদফতরে। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, খবর দেওয়া হলেও বন দফতরের তরফ থেকে কেউ আসেননি। স্থানীয় এক বাসিন্দারা প্রাণীটিকে উদ্ধার করতে গেলে, তাঁকে কামড়ে পালিয়ে যায় প্রাণীটি। আহত ওই বাসিন্দাকে পানিহাটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। ঘটনার পর থেকে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত। প্রাণীটিকে বাঁশ,লাঠি নিয়ে খুঁজছেন এলাকার বাসিন্দারাই।
এলাকারই কোনও বাড়িতে ঢুকে পড়ার ভয় রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, ওই প্রাণীটি আসলে বাঘরোল। কিন্তু নাটাগড়ের মতো এত ঘিঞ্জি এলাকায় বাঘরোল কীভাবে এল, সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, আগে কখনও এলাকায় এই ধরনের প্রাণী দেখা যায়নি। বাঘরোল একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। মাঝারি আকারের বিড়ালগোত্রীয় একধরনের স্তন্যপায়ী বন্যপ্রাণী। যেসব এলাকায় জলাশয় বেশি, সেই সব এলাকাগুলিতেই মূলত এই প্রাণী দেখা যায়। মূলত এরা মাছই খায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এরা মানুষের সাধারণত কোনও ক্ষতি করে নায যেহেতু এই প্রাণীর চেহারার সঙ্গে বাঘের মিল রয়েছে, তাই সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরকমই একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল কোন্নগরে। একটি বাঘরোলকে কেবলমাত্র গুজবেই পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল। এক্ষেত্রেও যাতে এই ধরনের কোনও ঘটনা না ঘটে, সেক্ষেত্রে বনদফতরের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।