উত্তর ২৪ পরগনা: নিমন্ত্রিতরা তখনও উপস্থিত। অনুষ্ঠান বাড়িতে রান্নাঘর থেকে ভেসে আসছিল চিৎকার চেঁচামেচি। এমনকি নিজের রিসেপশনে নিমন্ত্রিতদের দেখভাল, সৌজন্য বিনিময় বাদ দিয়ে পাত্রও ততক্ষণে রান্নাঘরে। তিনিও জড়িয়ে পড়েন ঝামেলায়। পাত্রী তো রীতিমতো স্তম্ভিত। বিয়ে বাড়িতে তখন তুলকালাম কাণ্ড। বউভাতের অনুষ্ঠান চলাকালীন খাবার নিয়ে পাত্রপক্ষের সঙ্গে ক্যাটারিং-এর কর্মীদের বচসা। তা গড়ায় হাতাহাতিতে। মারামারিতে আহত হন পাত্রের বোন-সহ দু’জন মহিলা। ঘটনার পর পলাতক পাত্র। সোদপুরের পানশিলা সাধুর মোড়ের ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আহত মহিলাকে পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় খড়দহ থানার পুলিশ। এখানেই শেষ নয়, মারধরের প্রতিবাদে কন্যা যাত্রীর বাস আটকে বিক্ষোভ দেখান ক্যাটারিং কর্মীরা। অভিযুক্ত পাত্রের বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
সাধুরমোড় এলাকায় এক যুবকের বিয়ে ছিল। বিয়েতে খাবারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এলাকারই এক ক্যাটারিং সংস্থাকে। নিমন্ত্রিতদের মাথা পিছু প্লেট হিসাবে ধরা হয়েছিল। অভিযোগ, পাত্রপক্ষের লোক গিয়ে দেখেন খাবার কম পড়েছে। তখন থেকেই ক্যাটারিং কর্মীদের ওপর তাঁরা চড়াও হন বলে অভিযোগ। সন্ধ্যা থেকেই দুপক্ষের অশান্তি লেগে ছিল।
রাত বাড়তে নিমন্ত্রিতদেরও ভিড় হতে থাকে। অভিযোগ, খাবার কম পড়ায় অনেককেই না খেয়ে ফেরত যেতে হয়। এই পরিস্থিতিতে পাত্র স্বয়ং ক্যাটারিং কর্মীদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন।
এক ক্যাটারিং কর্মী জানাচ্ছেন, প্রথম থেকে সব ঠিকঠাকই চলছিল। তিন নম্বর ব্যাচ বসেছিল খেতে। এক একটা ভাগে ৫০-৬০ জন করে খেতে বসেছিলেন। তিন নম্বর ব্যাচে এক জন খাবার পাননি। অভিযোগ, প্রথম থেকেই পাত্রপক্ষের বাড়ির সদস্যরা তাঁদের গালিগালাজ করছিলেন। প্রতিবাদ করায় তাঁদের মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে, পাত্রপক্ষের অভিযোগ, খাবার সঙ্কট হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা মাথা পিছু প্লেট গুনে টাকা দিয়েছিলেন, তাতে খাবার সঙ্কট কীভাবে পড়তে পারে?
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দু’পক্ষের সঙ্গেই কথা বলে। তবে ঘটনার পর থেকে পলাতক পাত্র। ক্যাটারিং সংস্থার মালিকের বক্তব্য, “আসলে পাত্র-পাত্রী পক্ষের মধ্যেই ঝামেলা ছিল। আর সব রাগ এসে পড়ে আমার ছেলেদের ওপর।” এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হননি। অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।