হিঙ্গলগঞ্জ: ছোটবেলায় হান্সের গল্প আমরা অনেকেই পড়েছি। নিজের জীবন বিপন্ন করে ছোট্ট বাচ্চার বাঁধ রক্ষা করে গোটা গ্রামকে বাঁচানোর গল্প নাড়িয়ে দেয় আমাদের মন। জীবনযুদ্ধের অনুপ্রেরণাদায়ত ওই গল্পের রেশ আজও রয়েছে গিয়েছে অনেকের মনেই। এবার যেন সিত্রাংয়ের চোখরাঙানির মাঝে হান্সের সেই গল্পের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া গেল সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জে। রাত জেগে বাঁধ পাহারায় গ্রামের সাধারণ মানুষ। এদিকে এরইমধ্যে সিত্রাং (Cyclone Sitrang) সতর্কতায় সুন্দরবনের সন্দেশখালিতে একাধিক দ্বীপে নামলো কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল। রবিবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাঙ্গের সচেতনতার বার্তা দিতে দু’নম্বর বিএন বেঙ্গলের এনডিআরএফ এর ৮ সদস্যের এক প্রতিনিধি দলকে সঙ্গে নিয়ে সন্দেশখালি থানার ওসি অনিমেষ দাও সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের খুলনা, কোরাকাটি, আতাপুর ও জেলিয়াখালী সহ একাধিক দ্বীপে গিয়ে যেমন মানুষকে সচেতনতার বার্তা দিলেন।
অন্যদিকে কলাগাছি, রায়মঙ্গল ও বিদ্যাধরী সহ একাধিক নদী বাঁধও পরিদর্শন করলেন ওসি অনিমেষ দাও। বাঁধপাড়ের মানুষদের সচেতন করলেন। বিশেষ করে ঝড়ের সময় ঝোড়ো বাতাস এবং নদীর প্রবল জলোচ্ছ্বাসের ফলে গ্রামে জল ঢুকে গেলে অথবা বাড়ি উড়িয়ে নিয়ে গেলে কিভাবে নিজেদেরকে সুরক্ষিত রাখবেন। কখন বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশায় কেন্দ্রে বা কখন কোন উচ্চ বিদ্যালয়ের উঁচু জায়গায় আশ্রয় নেবেন সবটাই তাদের জানানো হয়। পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাচ্চাদের জন্য শুকনো খাবার ও গুঁড়ো দুধ এবং সবার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেগুলি কোথায় গেলে পাওয়া যাবে তাও জানানো হয় সাধারণ মানুষকে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে আগামী ২৪ ও ২৫ তারিখ ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে সুন্দরবনে। তবে অভিমুখ মূলত বাংলাদেশের দিকেই।
তবে তাঁর আগেই ক্ষয়ক্ষতি রুখতে এখন থেকে কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছে পুলিশ ও এনডিআরএফ। অন্যদিকে সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের ন্যাজাট এক ও দুই, কালিনগর ও সেহেরা সহ একাধিক দ্বীপের গ্রামে মোতায়েন করা হয়েছে ১০ সদস্যের সিভিল ডিফেন্সের একটি দল। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিনা মন্ডল ঘূর্ণিঝড় প্রসঙ্গে বলেন, “ইতিমধ্যে মৎস্যজীবীদেরকে নদীতে বা সাগরে যেতে বারণ করা হয়েছে। সুন্দরবনের একাধিক ব্লক জুড়ে শুকনো খাবার, বিস্কুট, চিড়ে, জলের পাউচ ও ত্রিপলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফ্লাড সেন্টারগুলিকেও প্রস্তুত করা হয়েছে।”