বসিরহাট: ওড়িশার জাজপুরে ভয়াবহ পথদুর্ঘটনা (Road Accident)। প্রাণ কাড়ল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের সাতজনের। বসিরহাটের মাটিয়া থানার ধান্যকুড়িয়া গ্রামপঞ্চায়েতের নেহালপুর সর্দারপাড়া থেকে শুক্রবার বিকেল ৩টে নাগাদ একটি চার চাকা রওনা দেয়। ওই সাতজন ছিলেন। মূলত পোলট্রি ফার্মে কাজের জন্য যাচ্ছিলেন তাঁরা। শনিবার তখন ভোর ৪টে। ওড়িশার জাজপুর জেলার ধর্মশালা থানার চণ্ডীপুরে জাতীয় সড়কে রাস্তার ধারে গাড়ির মধ্যে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন চালক ও খালাসি-সহ সাতজন। সেই সময় পিছন দিক থেকে একটি ডাম্পার সজোরে ধাক্কা মারে। পুলিশ সূত্রে খবর, একেবারে দুমড়েমুচড়ে যায় গাড়িটি। এলাকার লোকজনই তড়িঘড়ি ওই সাতজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে চিকিৎসকরা সাতজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।
কী কারণে এই দুর্ঘটনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ভোরে কি ঘন কুয়াশা ছিল? সে কারণেই কি পিছন থেকে ডাম্পারটি এসে সজোরে ধাক্কা মারে। তদন্ত শুরু করেছে ধর্মশালার পুলিশ। এদিকে ভোরের আলো ফুটতেই নেহালপুরের সর্দারপাড়ায় পৌঁছয় খবর। গোটা গ্রাম যেন শোকে পাথর।
নিহতদের প্রত্যেকেরই বয়স ২০ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাড়ির লোকেরা। কেউ স্বামীকে হারিয়েছেন, কেউ সন্তানহারা। আবার কারও ভাই, কারও নিকট আত্মীয়। হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। নিহতরা হলেন, আমজাদ আলি সর্দার (২৮), জাহাঙ্গির সর্দার (৪০), করিম সর্দার (২৫), আমিরুল সর্দার (২৬), আরিফ সর্দার (২৬), টিঙ্কু সর্দার (৩০), সুরজ সর্দার (৪৯)। সুরজ ছিলেন গাড়ির চালক।
এক নিহতের আত্মীয় বলেন, “সকালে ফোন আসে। যিনি ফোন করেছিলেন, বললেন তোমাদের গাড়ি থেকে ৭ জন মারা গিয়েছেন। শ্রমিক, গাড়ির চালক সকলেই মারা গিয়েছেন।” জানা গিয়েছে, পেটের টানে কাজে যাচ্ছিলেন ওই যুবকরা। ভিন রাজ্যে কাজ করে রোজ ৩০০ টাকা লাভ হয়। এইভাবে তিনদিন একসঙ্গে থেকে কাজ করে ৯০০ টাকা নিয়ে ফিরে আসেন তাঁরা। এর আগেও এভাবে কাজে গিয়েছেন। বাড়ির লোকজন ভাবতেই পারছেন না, এমন খবরও আসবে।