সন্দেশখালি: শুক্রবার সকাল থেকে নতুন করে তপ্ত হতে শুরু করেছে সন্দেশখালির বেড়মজুর। মহিলারা ঝাঁটা-লাঠি হাতে রাস্তায় নেমেছেন, জ্বলেছে তৃণমূল নেতাদের দখল করা মাছের ভেড়ি, বাড়িঘরে চলেছে বেপরোয়া ভাঙচুর। সন্দেশখালিতে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের আগুন নতুন করে জ্বলে উঠেছে। দুদিন আগেই সন্দেশখালিতে গিয়েছেন ডিজি রাজীব কুমার। নিগৃহীত গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। রাতে গ্রামে টহল দিয়েছেন, রাত্রিযাপন করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে সন্দেশখালি ছেড়েছেন তিনি। শুক্রবার সকাল থেকে নতুন করে তপ্ত হতে শুরু করেছে সন্দেশখালি। প্রথমে এলাকায় পৌঁছে যান ADG দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার। বেড়মজুরে যখন বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি, তখনই আবার শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে। স্ত্রী-মেয়েকে শ্লীলতাহানিরও অভিযোগ ওঠে। পরিস্থিতি আরও তপ্ত হয়ে ওঠে।
এসবের মধ্যেই শনিবার সকালে সন্দেশখালিতে পৌঁছে যান ডিজি রাজীব কুমর। গ্রামে যেভাবে বাড়ি ভাঙচুর, আগুন ধরানোর ঘটনা ঘটছে, তাতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন ডিজি। তিনি বলেন, “যাঁরা আইন ভাঙার চেষ্টা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ হবে।”
পাশাপাশি এদিন সংবাদমাধ্যমকেও সচেতন করলেন ডিজি। তিনি বলেন, “কালকে একটা জমি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে গ্রামবাসীদের হাতে। পরেরদিন সংবাদমাধ্যমে সেখানে এমনভাবে দেখানো হল, যাতে গ্রামবাসীরা সেই জমি নিজেই নিয়ে নিচ্ছেন। সংবাদমাধ্যম যেন মানুষকে প্ররোচনা না দেন। যে আইন ভাঙবে, তার বিরুদ্ধে প্রথম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোথাও আইনে এরকম নিয়ম নেই, যে আমার প্রতি অন্যায় হয়েছে, আমরা আইন ভাঙতে পারি। যারা বাড়ি ভাঙচুর করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আগে ব্যবস্থা নিতে বলব আমার অফিসারদের।”
ডিজি আরও বলেন, “যাঁদের ওপর অন্যায় হয়েছে, তাঁদের আমরা আশ্বস্ত করছি। আমরা ক্যাম্প শুরু করেছি। কালকেও অনেকে জমি পেয়েছেন। জেলাশাসকের তরফ থেকেও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগে অভিযোগ উঠছিল মহিলাদের ওপর অত্যাচার হচ্ছিল। আমরা যখন ওই বিষয়টা দেখছি, তখন আবার বাড়ি ভাঙচুর হচ্ছে।” কিন্তু জনরোষের এই ধরনের প্রতিফলনকে যে একেবারের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না, তা পরিষ্কার করে দিলেন ডিজি।
সন্দেশখালির গ্রামবাসীদের এখন একটাই দাবি, মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। ডিজি-র আবারও সন্দেশখালি যাওয়ায় আশার আলো দেখছেন সেখানকার বাসিন্দারা।