উত্তর ২৪ পরগনা: করোনার কারণে ২ বছর বন্ধ ছিল স্কুল। তার পর গত ১৬ তারিখ থেকে খুলেছে রাজ্যের সমস্ত স্কুল। তার মধ্যে কোথাও শিক্ষক আবার কোথাও পড়ুয়ার করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় কয়েকদিনের জন্য বন্ধ হয়েছে সংশ্লিষ্ট স্কুল। এবার উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় একটি স্কুলের বাংলার শিক্ষিকা সপরিবারে করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় তীব্র আতঙ্ক ছড়াল অভিভাবকদের মধ্যে। চিন্তায় শিক্ষকরাও।
জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নিয়েছেন পামেলি মণ্ডল নামে বাংলার শিক্ষিকা। তার পরের দিনই তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। শুধু তিনিই নন, তাঁর স্বামী সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যও কোভিডে আক্রান্ত। আর এই ঘটনায় ওই স্কুলের শিক্ষিকার সহকর্মী থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে প্রশাসনিকভাবে স্কুল স্যানিটাইজিংয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে। পাশাপাশি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে স্কুলের পঠন পাঠন।
সঞ্জয় কুমার ঘোষ নামে ওই স্কুলের এক শিক্ষকের কথায়, “স্কুলে দৈনন্দিন পঠনপাঠন শুরু হয়েছিল। ছাত্রছাত্রীরা সবাই স্কুলে এসেছিল। সাড়ে চারটে পর্যন্ত ক্লাস-ও হয়েছে। তবে শুক্রবার পর্যন্ত বাংলার ওই শিক্ষিকার কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না। তবে উনি বাড়ি গিয়ে রাত্রিবেলা খাবার খাবার সময় সমস্যা বুঝতে পারেন। খাবারের স্বাদ পাচ্ছিলেন না। পরের দিন সকালে উনি করোনা পরীক্ষা করান। পরীক্ষা পজিটিভ আসে। পরে যা হয়, স্কুলের পক্ষ থেকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরকেও জানানো হয়েছে।”
ওই শিক্ষক আরও জানান যে তার পরেই তাঁরা স্কুল স্যানিটাইজ করার কাজ করেন। তবে ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর সময় তো শিক্ষিকা জানতেন না তাঁর উপসর্গের কথা। তাছাড়া তাঁর দুটো টিকা নেওয়া রয়েছে। এবং মুখে মাস্ক পরেই তিনি ক্লাস করেছেন। তাই আশঙ্কা করার দরকার নেই বলে জানান তিনি। তবে স্কুলের তরফে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে সোমবার স্কুল বন্ধ রয়েছে বলে খবর।
শিক্ষকের কথায়, “স্বাভাবিক ভাবে ভীতির সঞ্চার তো হয়ই। উনি ডবল ডোজ় ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাই ছাত্রছাত্রীর পরিবার থেকে শিক্ষকরা সবার মধ্যে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।”
এদিকে অঙ্কিত দাস নামে ওই স্কুলের ক্লাস টেনের এক ছাত্র জানাচ্ছেন, “স্কুল এখন বন্ধ রয়েছে। আমরা আশা করি আবার দ্রুত স্কুল খুলবে। সেই সঙ্গে ম্যামেরও দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। ম্যাম আমাদের ক্লাস নিয়েছিলেন। এবং স্কুলে প্রতিদিনই আসতেন। তাই একটু আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তবে উনি তাড়াতাড়ি সেরে উঠুন।”
রুদ্দিন মোল্লা নামে আরেক ছাত্রের কথায়, “এখন আমরা খুব ভয়ে আছি। প্রায় ২ বছর স্কুল বন্ধ ছিল। ক্লাসে পঠনপাঠনও বন্ধ ছিল। তার পর ১৬ তারিখ থেকে স্কুল খুলল। সামনে আমাদের টেস্ট পরীক্ষা রয়েছে। কিন্তু এখন যে আবার করোনার ঢেউ এগিয়ে আসছে, তা নিয়ে আমরা খুব ভয়ে রয়েছি। তবে ম্যামের কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি। উনি আমাদের ক্লাস করেছেন। তার পর জানলাম উনি করোনা আক্রান্ত। ওঁনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”