উত্তর ২৪ পরগনা: “আমাকে ব্যবহার করে কেউ নিজের সম্পত্তি বাড়াক, আমি সেটা চাই না।” দল যেখানে দুর্নীতি ইস্যুতে বিদ্ধ, সেখানে দাঁড়িয়ে নিজের পক্ষে সওয়াল করলেন খড়দহের বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। রবিবার খড়দহের মহিষপোতা এলাকায় দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিস্ফোরক শোভনদেব।
সাম্প্রতিকতম কয়েকটি ইস্যু, কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় রীতিমতো তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দুর্নীতি ইস্যুতে বিদ্ধ শাসকদল। এক্ষেত্রে শীর্ষ নেতৃত্ব দলের নেতার ভাবমূর্তি রক্ষার ওপর বিশেষ নজর দিচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে দলের সাধারণ কর্মসূচিগুলিতেও দলীয় কর্মীদের এই ইস্যুতেই বার্তা দিচ্ছেন তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা। রবিবার খড়দহের একটি সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে শোভনদেব বলেন, “আমার নাম করে কেউ প্রভাবশালী হবে আমি বরদাস্ত করব না।” সোদপুর ঘোলা মহিষপোতা অঞ্চলে দলীয় এক অনুষ্ঠানে শোভন বলেন, “আমাকে ব্যবহার করে কেউ সম্পত্তি বাড়াক, আমি সেটা চাই না।” সভায় উপস্থিত দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আবারও আপনাদের কাছে বলছি প্লিজ প্লিজ প্লিজ, আপনারা আমাকে ভোট দিয়েছেন, নির্বাচনে জয়ী করেছেন, আপনারা আমার জীবনযাত্রার ওপর নজুর রাখুন। আমি কেমন আছি, সেটা খেয়াল রাখুন।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আদতে শোভনদেব বলতে চেয়েছেন, আদৌ কোনও জনপ্রতিনিধির জীবনযাত্রায় আচমকা কোনও বদল আসছে কিনা, সেটা খেয়াল রাখতে হবে আমজনতাকেই। শোভনদেবের কথায়, “আপনারা ভোট দিয়েছেন আমাকে, আমি কেমন আছি দেখবেন না?আমি খড়দহের বিধায়ক বলে আমি এখানকার মানুষের জন্য কাজ করছি না, আমি খড়দহের বিধায়ক বলে আমার সম্পত্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছি।” এরপরই তিনি একটি ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “যার কিছু ছিল না, সে হঠাৎ করে সম্পত্তির মালিক হয়ে গেল!একজন বাসের কনডাক্টর, সে ৫০ বিঘার মালিক হয়ে গেল!এ কখনও সম্ভব হয়?” তাঁর প্রশ্ন, “কোথা থেকে হয়, কে দিচ্ছে টাকা?” এক্ষেত্র উল্লেখ্য, পার্থ ঘনিষ্ঠ প্রসন্নই হোক কিংবা প্রদীপ সিং, আবদুল আমিন- কেউ রং মিস্ত্রি ছিলেন, কেউ বা আবার সামান্য ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা কিংবা দশ হাজারির প্যারাটিচারি করতেন। তাঁরাই আজকের দিনে কোটি কোটি টাকার মালিক। ইডি-সিবিআই- এর স্ক্যানারে তাঁরা। রাজ্য জুড়ে যেভাবে তাঁদের সম্পত্তির হদিশ মিলছে, তা রীতিমতো চক্ষু ছানাবড়া করার মতন! রাজ্যের বেশ কয়েকটি চর্চিত নামের সম্পত্তির হদিশ মিলেছে, তাতে শাসকদলের নাম জড়িয়েছে আষ্টেপৃষ্টে। তাতেই শাসকদলের প্রথম সারির নেতারা এখন ময়দানে নেমেছেন ‘ইমেজ’ রক্ষার স্বার্থে।