উত্তর ২৪ পরগনা: আর হাতে গোনা কয়েকদিন। সপ্তাহান্তেই শুরু হচ্ছে পুজো। দেবীপক্ষের সূচনায় মহালয়ার দিনে চণ্ডীপাঠ করলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। কেনা এই চণ্ডীপাঠ? বিধায়কের স্পষ্ট উত্তর ‘মনে শান্তি চাই।’ এদিন, বেলঘড়িয়ার মানসবাগে দুর্গা পুজো কমিটির পুুজো প্রাঙ্গণে চণ্ডীপাঠ করেন বিধায়ক (Madan Mitra)।
বরাবরই নিত্যনতুন কর্মকাণ্ডের জন্য চর্চায় থাকেন তৃণমূল বিধায়ক। কিছুদিন আগেই আগমনী গান গেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রভূত চর্চায় আসেন বিধায়ক। মহালয়ার দিনে বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করে কেন এই চণ্ডীপাঠ? সে প্রসঙ্গে, অকপট মদন বলেন, “এতদিন কেন চণ্ডীপাঠ করিনি তাই ভাবি। এত শান্তি পাওয়া যায় জানতামই না। আহা! কি শান্তি! এ যেন স্বর্গীয় সুখ! মনের শান্তি খুব দরকার। মনে শান্তি চেয়েই চণ্ডীপাঠ করেছি। পুরো চণ্ডীপাঠ করতে পারলে মনে করব আমার এ জীবনে জন্ম নেওয়া সার্থক।” এখানেই না থেমে আরও বলেন, “এই মণ্ডপে পুজোর চারদিন টানা চণ্ডীপাঠ হবে। এই যে চারিদিকে এত অনাসৃষ্টি, কলেরার দাপট, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ তাই নবমীর দিন আমরা একটা হোম-যজ্ঞের আয়োজন করেছি। ওইদিন সারাদিন যজ্ঞ হবে।”
কিন্তু, বানভাসি বঙ্গের পরিস্থিতিতে একের পর এক বিরোধীদের প্রশ্নবাণ ছুটে আসছে তখন, বন্যা দুর্গতদের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ করার কথা ঘোষণা করেন মদন। তিনি বলেন, “আগামী সপ্তাহেই কামারহাটির থেকে ৫০ জনের একটি দল যাবে বন্যাগ্রস্ত এলাকায়। সেখানে দুর্গতদের জন্য যা যা করা সম্ভব তা করা হবে।”
উল্লেখ্য, পুজো উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ১১ দফা গাইডলাইন জারি করেছে নবান্ন। মণ্ডপে প্রবেশে জারি থাকছে নিষেধাজ্ঞা। মহালয়ার দিনেও জারি ছিল একাধিক বিধিনিষেধ। বুধবার ভোর ৪টে থেকে গোটা দিনই বন্ধ ছিল চক্ররেল। পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল স্ট্র্যান্ড রোড অন্যান্য নদীঘাটের সংযোগকারী রাস্তায়। ভোর ৪টে থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত জারি এই নিয়ম। পাশাপাশি তর্পণাদির জন্য় ছিল বিশেষ নিয়ম। মোট ৩৭ টি ঘাটে থাকছে ৩৭ টি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর বিশেষ টিম। প্রত্যেক টিমেই রাখা হয় কমপক্ষে ২ জন করে ডুবুরি। কলকাতা ও হাওড়া, দুই দিকের ঘাটের জন্যই একই ব্যবস্থা।
এখানেই শেষ নয়, গঙ্গাবক্ষে বুধবার ভোররাত থেকেই টহলদারি রিভার ট্রাফিক পুলিশের। মূলত স্পিডবোট ও জেটস্কিতেই চলেছে নজরদারি। তর্পণ করতে এসে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে সেদিকে নজর রাখতেই এই বিশেষ ব্যবস্থা। প্রত্যেক ঘাটে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে দূরত্ব। জলেও থাকছে ভাসমান বেলুন। তাই কেউ জলে নেমে তর্পণ করতে চাইলে ওই বেলুন-সীমারেখা পার করা যাবে না। যাঁরা তর্পণ করবেন তাঁদের প্রত্যেকের মুখে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া ছোট ছোট দলে ভাগ করে চলবে তর্পণাদির অনুষ্ঠান। এক ঘাটে যাতে অনেক ভিড় না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হবে। সামাজিক দূরত্ববিধি মানতে হবে। এমনই নির্দেশ জারি করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন: COVID Vaccination: ‘টিকা আসবে বলে’ রাতভর লাইনেই, শেষে কেন্দ্রের মধ্যেই দৌড়াদৌড়ি প্রাপকদের!