ব্যারাকপুর: মনোনয়ন পর্বের শুরু থেকেই গোঁজ কাঁটায় বিদ্ধ তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election 2023) দলের পছন্দ নাহলেও দলের প্রতীকে দাঁড়ানো নিয়ে নাছোড়বান্দা বহু কর্মী। যা নিয়ে অস্বস্তি বাড়ছে শাসকদলের অন্দরে। সারা বছরই শিল্পাঞ্চল ব্যারাকপুরে তৃণমূলের (Trinamool Congress) গোষ্ঠী কাজিয়া লেগেই থাকে। ভোটের ময়দানেও ব্যারাকপুরে কোন্দল অব্যাহত। সেখানে এখন গোঁজ-কাজিয়া তুঙ্গে। ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার জেঠিয়া পঞ্চায়েত। সেখানে দলের বিরুদ্ধেই ময়দানে নেমেছেন একের পর এক গোঁজ প্রার্থী। অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে টিকিট বিক্রি করেছে দলের একাংশ।
গোঁজ প্রার্থীদের অভিযোগ, বিরোধীদের হাতে পঞ্চায়েত তুলে দেওয়ার চক্রান্ত হচ্ছে। নিশানায় খোদ এলাকার বিধায়ক তথা সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। তবে পার্থ ভৌমিকের সাফ বার্তা, দল যাঁকে প্রতীক দেবে সেই প্রার্থী। বাকিদের সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই।
পার্থ ভৌমিক বলছেন, “গোঁজ প্রার্থীর ইচ্ছা থাকতে পারে প্রার্থী হওয়ার। কিন্তু, দল তো একজনের বেশি কাউকে প্রার্থী করতে পারবে না। এবার দলের তাঁকেই মান্যতা দিয়েছে যেটা বুথ লেভেল থেকে উঠে এসেছে। এবার কেউ যদি মনে করে আমরাও প্রার্থী হব, তারাই মনোনয়ন দিয়েছে। এবার আমরা তাঁদের বোঝাব যে একজনের বেশি কাউকে প্রার্থী করা যাবে না। শেষে মানুষ যাঁকে ভোট দেবে তাঁরাই জিতবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিম্বল নিয়ে যাঁরা লড়বেন তাঁরাই তৃণমূলের প্রার্থী। এর বাইরে যাঁরা লড়বেন তাঁরা ভোটে রাজনৈতিকভাবে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী। যাঁরা নির্দল হয়ে লড়বেন তাঁদের আর কাউকে দলে ফেরত নেওয়া হবে না।”
তবে জেঠিয়ার গোঁজ প্রার্থী রানা দাশগুপ্ত বলছেন, “আমরা যখন দেখলাম জেঠিয়ায় প্রায় ১৫টা সিটে যাঁরা বিজেপি এবং সিপিএমে ছিল বা মোর্চায় আছে তাঁদের প্রার্থী করা হয়েছে তখন আমরা তার প্রতিবাদ করি। সাফ বলে দিই এই প্রার্থী আমরা মানছি না। এরা নাকি পয়সা দিয়ে প্রার্থী হয়েছে। যাঁরা প্রার্থী হয়েছে তাঁরা তো আর এটা বলবে না। আশপাশের লোকজনেরা বলছে।” শুধু ব্যারাকপুরই তো নয়। জেলায় জেলায় গোঁজ কাঁটায় শাসক দলের ব্যথা বাড়ছে। যদিও ব্যারাকপুরে গোঁজরা গোঁ ধরে থাকলেও, মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি নির্দল হলে বিরোধী হিসেবেই লড়াই হবে।
নির্বাচন কমিশনের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ। তিনটে স্তর মিলিয়ে মোট আসন ৭৩ হাজার ৮৮৭টি। অথচ, তিন স্তর মিলিয়ে তৃণমূলের মোট মনোনয়ন জমা পড়েছে ৮৪ হাজার ১০৭টি। তার মানে, তৃণমূলের হয়ে ১০ হাজার ২২০টি মনোনয়ন বেশি পড়েছে।