উত্তর ২৪ পরগনা: প্রত্যাবর্তনের পরই তৃণমূলের সংগঠনে গুরুদায়িত্ব পেলেন অর্জুন সিং। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার দায়িত্ব দেওয়া হল ব্যারাকপুরের সাংসদকে। গত লোকসভা ভোটে বনগাঁ হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। বিধানসভা ভোটেও এই লোকসভায় ভাল ফল করে বিজেপি। ২০২৪-এ বনগাঁ পুনরুদ্ধার টার্গেট তৃণমূল কংগ্রেসের। আর তাতে বিজেপিতে তিন সাড়ে তিন বছর ঘর করে আসা অর্জুনেই ভরসা রাখছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকরা। তিনটে বছর পার করে ‘ঘরওয়াপসি’ হয়েছে অর্জুনের। টিটাগড়ে দলীয় দফতরে অর্জুনকে সোমবার স্বাগত জানাতে একটি বৈঠক ডাকা হয়। উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সূত্রের দাবি, সেখানেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘোষণা করেন অর্জুনের নতুন দায়িত্বের কথা।
সূত্রের খবর, বৈঠকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “বনগাঁর দায়িত্বটা অর্জুনের হাতে দিতে হবে। বনগাঁর দায়িত্বটা অর্জুন নেবে। তার মানে বুঝতে পেরেছেন তো? ক্লিয়ার করে আমি আর বলছি না। সাফা করতে হবে, এ জেলা থেকে সাফ করে দিতে হবে। পাঁচে পাঁচ এ জেলায় যেন হয় সেটা মাথায় রাখতে হবে।” একইসঙ্গে এদিন হাবড়ার তৃণমূল বিধায়ক মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় বলেন, “অর্জুন তো ঘরে ফিরে এল। ও তো বিজেপির কেউ ছিল না। অর্জুন আমাদের ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। যার জন্য বেরিয়ে গিয়ে অর্জুন সাংসদ হল, সেই লোকটাই তো চলে গিয়েছে।”
এদিনের বৈঠকে ছিলেন দমদমের সাংসদ সৌগত রায়ও। তিনি বলেন, “একটা লোক সাংসদ, দীর্ঘদিনের বিধায়ক, সে দলে ফিরল দল শক্তিশালী হল না এটা কী করে বলি। আমরা হয়ত অনেকটা জায়গা কভার করেছিলাম। আমরা সব বিধানসভাই জিতে নিয়েছিলাম ভাটপাড়া ছাড়া।” অন্যদিকে গত কয়েকদিনে অর্জুন-বিরোধী কোনও তোপ দাগতে যাঁকে বারবার এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে, সেই পার্থ ভৌমিক, নৈহাটির বিধায়ক বলেন, “৯৮ সাল থেকে তৃণমূলের সঙ্গে অর্জুন। তিনি থাকলে দলের শক্তি তো বাড়বেই। আমাদের লড়াইটা ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে ছিল, ব্যক্তি অর্জুনের বিরুদ্ধে ছিল না। উনি যখন ভারতীয় জনতা পার্টি ছেড়ে চলে এসেছেন, তখন এবার লড়াইটা আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই লড়ব।”
অন্যদিকে ঘরে ফেরার পর নতুন দায়িত্ব পেয়েই ব্যারাকপুরের ‘বাহুবলী’ সাংসদের হুঙ্কার, “অনুগামীদের কথা তো ছেড়েই দিলাম, ব্যারাকপুর বিজেপির ৯০ শতাংশ মানুষ তৃণমূলে যোগ দেবে।” উত্তর ২৪ পরগনার প্রতিটি পুরসভায় অর্জুন সিংকে দলের তরফে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। ব্যারাকপুর জেলা সাংগঠনিক সভাপতি পার্থ ভৌমিক এই নির্দেশ দিয়েছেন। অর্জুনের রথ ফিরেছে পুরনো ঘরে। তাঁকে স্বাগত জানাতে সোমবার কে ছিলেন না? সৌগত রায়, ব্রাত্য বসু, সুজিত বসু, রাজ চক্রবর্তী, রথীন ঘোষ, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সকলেই ছিলেন এই বৈঠকে। পুরনো সতীর্থকে ফিরে পেয়ে সকলেই বেশ খুশি।