Good News: ৭০ বছরে বাবা, ৫৪ বছরে মা হলেন অশোকনগরের দম্পতি; নতুন সদস্যদের সাড়ম্বরে বরণ বাড়ির লোকের

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Dec 03, 2022 | 2:10 AM

North 24 Parganas: দত্ত দম্পতির কথায়, একাকিত্ব কাটাতে মানসিক সাহসটাই দরকার। চিকিৎসা বিজ্ঞান এখন অনেক উন্নত। সেটাও তাঁদের ভরসা জুগিয়েছিল।

Good News: ৭০ বছরে বাবা, ৫৪ বছরে মা হলেন অশোকনগরের দম্পতি; নতুন সদস্যদের সাড়ম্বরে বরণ বাড়ির লোকের
যমজ সন্তানের জন্ম দত্ত পরিবারে।

Follow Us

উত্তর ২৪ পরগনা: রেল দুর্ঘটনায় একমাত্র ছেলেকে হারিয়েছিলেন অশোকনগর (Ashoknagar) কাকপুল নয়া সমাজের দত্ত দম্পতি। তরতাজা ছেলেকে হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েন তাঁরা। ছেলে অনিন্দ্যই ছিল তাঁদের পৃথিবী। ২০১৯ সালে ছেলের মৃত্যু হতাশার দিকে ঠেলে দেয় ৭০ বছর বয়সী তপন দত্ত ও ৫৪’র রুমা দত্তকে। এরপর নিজেরাই ঘুরে দাঁড়ান। সিদ্ধান্ত নেন আবার নতুন প্রাণ আনবেন পৃথিবীতে, সন্তানের জন্ম দেবেন। যেহেতু স্বামী-স্ত্রীর বয়সটা বেশি, নানা সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। তবে সমস্ত বাধা পার করে এখন যমজ সন্তানের মা-বাবা তাঁরা। অক্টোবর মাসের ১০ তারিখ এক ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম দেন তপনবাবুর স্ত্রী রুমা দত্ত। ৩০ নভেম্বর সন্তানদের নিয়ে অশোকনগর কাকপুল নয়াসমাজের বাড়িতে আসেন তাঁরা। সুস্থ আছেন মা ও শিশুরা।

তপন দত্তের কথায়, “আমি পুলিশে কাজ করতাম। ২০১৯ সালে আমার একমাত্র সন্তান একটা ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা যায়। আমরা তখন দিশাহারা। আমাদের মানসিক যে কষ্ট এবং একাকিত্ব বলে বোঝাতে পারব না। ধীরে ধীরে ভাবতে থাকি আমাদের অবলম্বন দরকার। কলকাতার বহু ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করি। তাঁদের মতামত নিই। কতটা কী ঝুঁকি আছে সবটা জানি। তারপরই সিদ্ধান্ত নিই বাচ্চা নেব। সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে, আমরা চেয়েছিলাম কষ্ট কিছুটা ভুলে থাকতে। কলকাতার ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে করতেই হাওড়ার বালির এক ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওনাকে সবটা জানাই। আমাদের বয়সের বিষয়টা আগে জানাই। ২০২১ সালের অক্টোবর নভেম্বর নাগাদ ওনার কাছে চিকিৎসাও শুরু করি। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে আমার স্ত্রী কনসিভ করেন। কনসিভ করার পর ওর চিকিৎসা চলছিল। শেষের দিকে স্ত্রীর অবস্থা খারাপও হয়। ১২ তারিখ ডেলিভারি করানোর কথা ছিল। স্ত্রীর হঠাৎ শরীর বেশি খারাপ হওয়ায় আগেই প্রসব করাতে হয়।” লক্ষ্মীপুজোর পরই দত্তদের ঘর আলো করে আসে নতুন দুই সদস্য।

নতুন সদস্য়দের বাড়িতে আগমন।

দত্ত বাড়ির অন্যান্য সদস্যরাও দারুণ খুশি। তাঁদের কথায়, প্রত্যাশার থেকে অনেক বেশি কিছু পেয়েছেন। যমজ সন্তান হবে ভাবতেও পারেননি তাঁরা। এদিন বেলুন, ফুল দিয়ে সাজানো হয় দত্ত বাড়ি চত্বর। ফুল বিছানো হয় বাড়িতে ঢোকার পথে। তাঁদের বাড়ির এক সদস্য শ্রীপর্ণা ঘোষ দত্ত বলেন, “নতুন দু’জন সদস্য এল বাড়িতে। যতটা পেরেছি সাজিয়ে গুছিয়ে স্বাগত জানিয়েছি ওদের। ওরা আমাদের অনেক আদরের। আমরা তো ভাবতেই পারিনি একসঙ্গে দু’জন নতুন সদস্য আসবে বাড়িতে।” তবে এই আনন্দের দিনে তপনবাবুর বারবার মনে পড়ছে সেই ছেলের মুখ, বছর চারেক আগে যাঁকে হারাতে হয়েছে। তাঁর কথা ভেবে থেকে থেকেই চোখ ঝাপসা হয়ে উঠছে বাবার।

Next Article