উত্তর ২৪ পরগনা: কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিল তারকার হাট। বাংলার তারকাদের পাশাপাশি মুম্বই থেকে এসেছিলেন অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খানরা। তবে সেই মঞ্চে দেখা যায়নি মিঠুন চক্রবর্তীকে। যা নিয়ে প্রথম থেকেই সরব ছিলেন বিজেপি নেতারা। তবে মিঠুনের ডাক না পাওয়া প্রসঙ্গে তাঁর এক সময়ের সতীর্থ টলিউডের আরেক তারকা তথা তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন, রাজনৈতিক কারণেই ডাকা হয়নি টলিপাড়ার ‘মহাগুরু’কে। কী সেই রাজনৈতিক কারণ, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন চিরঞ্জিত। বারাসতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন, “ও আমার ভীষণ বন্ধু। আমরা একসঙ্গে কাজও করেছি। এটার রাজনৈতিক একটা কারণ আছে। তুমি আমাকে এখন গালাগাল দিচ্ছ, আর পরমুহূর্তে আমি আমার মেয়ের বিয়েতে তোমাকে ডাকব, এটা কি সম্ভব? এটা হয় না। বিজেপিতে চলে যাওয়া নয়, যে ধরনের কথাবার্তা বলছে, সেটা তো আমাদের পক্ষে বলছে না। আমাদের পলিসির বিরোধিতায় বলছে। ফলে শাসকগোষ্ঠী যদি একটা ফেস্টিভ্যাল করে, তাতে তো আর এরকম হবে না, সব লোককে বলবে চলে এসো। সাম্যের পূজারি আমরা, এরকমটা তো হয় না।”
গত ১৫ ডিসেম্বর ২৮ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সূচনা হয় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান, মহেশ ভাট, রানি মুখোপাধ্যায়, জয়া বচ্চন, শত্রুঘ্ন সিনহার মতো বলিউডের তাবড় তারকা যেমন সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন, টলিউডের নবীন-প্রবীণ প্রজন্মের তারকারাও ছিলেন। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অরিজিৎ সিং, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও ছিলেন মঞ্চে। তবে এই অনুষ্ঠানে মিঠুন চক্রবর্তীকে ডাকা হয়নি বলে সরব হন বিজেপি নেতারা।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার টুইটারে লেখেন, ‘অন্য রাজ্যের সুপারস্টারদের ডেকে নিজের রাজ্যের তারকাকে এড়িয়ে যাওয়া কেন, শিল্পের জন্য রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে রাখা উচিত।’ দিলীপ ঘোষকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “এ রাজ্যে সবকিছুতেই রাজনীতি। যত প্রতিষ্ঠান আছে, আমাদের প্রশাসনিক ভবনগুলোও তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়। আমাদের লোকেদের ডাক তো পড়েই না। সরকারের অনুষ্ঠানে বিরোধী বা অন্য কোনও মানুষকে ডাকা হবে না, এটাই দস্তুর।”
যদিও পাল্টা কুণাল ঘোষও বলতে ছাড়েননি। তৃণমূলের মুখপাত্রের বক্তব্য ছিল, “যে মিঠুনের রাজ্য সরকারের উপর আস্থা নেই, সেই সরকারের চলচ্চিত্র উৎসবে যেতে মিঠুন চক্রবর্তীর এত কেন? সবই যখন খারাপ, তাহলে চলচ্চিত্র উৎসব কী করে ভাল হতে পারে?” কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে শিল্পীসত্তার থেকে রাজনীতি কি বড়? শাসকদলের বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর বক্তব্য, “শিল্পীসত্তা বাদ দিয়ে রাজনীতি হওয়া উচিত না। কিন্তু সেটা হচ্ছে। মানছি আমি।”