উত্তর ২৪ পরগনা: বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন গারুলিয়ার এক রেশন ডিলার। তাঁর দাবি, রেশন অফিসারের কাছে তাঁর নামে মিথ্যা অভিযোগ জানানো হয়েছে। আরও চাঞ্চল্যকর দাবি, সেই অভিযোগ নাকি করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম লেখা লেটার প্যাডে। ওই রেশন অফিসারের দাবি, এই চিঠি একেবারেই ভুয়ো। কেউ মুখ্যমন্ত্রীর লেটার হেডের সমস্তটাই জাল করে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। অভিযোগকারীর মত, তাঁকে বদনাম করতে কেউ এই ষড়যন্ত্রের জাল পেতেছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নামের আশ্রয় নিয়ে এমন কাণ্ডে শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়।
অভিযোগ, সম্প্রতি গারুলিয়ার রেশন অফিসারের কাছে একটি চিঠি আসে। সেই চিঠি প্রেরকের জায়গায় মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের উল্লেখ। সেখানে দু’টি রেশন দোকানের নামে অভিযোগ করা হয়। একটি এফপিএস ৬৬৭ এবং একটি এফপিএস ৯৩৪। সেই চিঠিতে লেখা হয়, এই দু’টি রেশন দোকান থেকে সাধারণ মানুষ কোনও পরিষেবা পাচ্ছেন না। দু’টি দোকানে তদন্তে টিম যাক এবং লাইসেন্স বাতিল করা হোক।
এক রেশন ডিলারের দাবি, রেশন অফিসারের সেই চিঠি পেয়ে দোকানগুলিতে হাজির হন রেশন দফতরের আধিকারিকরা। কিন্তু কোনও বেনিয়ম তাঁদের নজরে আসেনি। এরপরই ভাল করে সেই চিঠি খতিয়ে দেখেন তাঁরা। খুঁটিয়ে দেখতেই নজরে আসে একাধিক অসঙ্গতি। খোঁজ খবর নিয়ে দেখা যায় সেই চিঠিটি নবান্ন নয়, পোস্ট করা হয়েছিল শ্যামনগরের একটি পোস্ট অফিস থেকে।
এদিকে যে দু’টি রেশন দোকানের নামে চিঠি এসেছে তাদের ঘুম উড়েছে। তাদের অভিযোগ, এটা কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে করছে। এ নিয়ে রেশন অফিসার বা সংশ্লিষ্ট অফিসের কেউ মুখ খুলতে চাননি। তবে এই চিঠি যে ভুয়ো, তেমনটাই বলেন জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। তাঁর অভিযোগ, তাঁর নামাঙ্কিত প্যাডেও ওই রেশন দোকানের নামে কেউ চিঠি পাঠিয়েছিল। তবে এবার সাহসের সীমা পার করে গিয়েছে। এই ঘটনার তদন্ত দাবি করেন তিনি। অন্যদিকে দুই রেশন ডিলারই জগদ্দল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক রেশন ডিলার বলেন, “এক শ্রেণির অসাধু লোক এসব করছে। ডিপার্টমেন্ট তো ভুয়ো কি না দেখবে না। ভাববে চিঠি এসেছে দিদির কাছ থেকে। চলো তাহলে দোকানে। গত ২৮ তারিখ একবার এসেছিল তারা। ৯ জন এসেছিলেন এই চিঠির উপর ভিত্তি করে। হিসাবমতো তো ভিজিল্যান্স টিমের আমার এখানে আসার কথাই না। আমার তো পাবলিকের কোনও অভিযোগ নেই। মানুষ জিনিস না পেয়ে অভিযোগ জানালে, নিশ্চয়ই ভিজিল্যান্স টিম আসত। আমি মানতাম। সম্প্রতি একটা খবর পাই, আরও একজনের নামে বদনাম করছে। আমি এখনই তাঁর নাম সামনে আনছি না। আমি চাই এর উপযুক্ত ব্যবস্থা হোক। যারা ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে, তাদের গ্রেফতার করা হোক। মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি বিকৃত করার সাহস পেল কোথা থেকে? খতিয়ে দেখা হোক এটা।”