আসানসোল: জামুরিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে দমকল স্টেশনের দাবি। এই সমস্যার কথা জামুরিয়ার মানুষ আমাকে জানিয়েছেন। শিল্পাঞ্চল এলাকা জামুরিয়া। দমকলের তো প্রয়োজন আছে। আমি খুব শীঘ্রই এখানে দমকল স্টেশনের ব্যবস্থা করব। আজকেই দমকল মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো। জামুরিয়া কেন্দা ফাঁড়ি ময়দানে লিট্টি চোখা উৎসবের যোগ দেন তৃণমূলে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে এসেই তিনি এই ঘোষণা করেন। জামুরিযার বিধায়ক হরেরাম সিং এর কাছে দমকল স্টেশনের আবেদন করা হয়েছে কিনা মঞ্চেই জানতে চান তিনি। হরেরাম সিং জানান আবেদন ইতিমধ্যেই তিনি করেছেন।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লিটি চোখা উৎসবে এসে দেখেন মঞ্চ তৈরি হয়েছে। তিনি জামুরিয়ার বিধায়ককে বলেন, “মঞ্চ কেন? আমি তো ভাষণ দিতে আসিনি। মানুষের সঙ্গে লিটি চোখে খেয়ে কথাবার্তার আদান প্রদান করতাম। মঞ্চ তৈরির প্রয়োজন ছিল না। খাওয়া-দাওয়া করতে করতে ভাবের আদান প্রদান হতো। তিনি বলেন এখানে পলিটিক্যাল কথা বলবো না। উৎসবের এই বাংলা হল ভাইচারা অর্থাৎ ভাতৃত্বের। বিভিন্ন উৎসবের মাধ্যমে সব ধর্মের পাশাপাশি সব অবস্থান এখানে। বিজেপির নাম না করে তিনি বলেন ধর্ম কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়।” জামুড়িয়ায় ‘লিট্টি চোখা অনুষ্ঠানে’ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়, বিজেপির ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকারকে ‘ট্রাবল ইঞ্জিন’ সরকার বলেও কটাক্ষ করেন এদিন।
সাংসদ তথা তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, জামুরিয়া এলাকার মানুষ তাকে জানিয়েছেন পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যাও শীঘ্রই সমাধান করবেন আশ্বাস দেন। এদিন মঞ্চে ছিলেন আসানসোলের সংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা, মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, জামুরিয়া বিধায়ক হরেরাম সিং, পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি নরেন চক্রবর্তী। এদিন মঞ্চ থেকে নেমে শত্রুঘ্ন সিনহা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একসাথে লিটি চোখার আস্বাদন নেন।
উল্লেখ্য তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচিতে লিট্টি চোখা উৎসব পালনের জন্য ১৫ হাজার লিট্টি তৈরি করা হয়। উৎপল মনি পন্ডিত গোপ বন্ধু ফ্রী প্রাইমারি স্কুলে লিট্টি তৈরির ব্যবস্থা হয়। লিট্টির সাথেই তৈরি হয় আদা রসুন দিয়ে আলু চোখা ও আম পুদিনা ও কাঁচা লঙ্কা দিয়ে তৈরি মুখরোচক চাটনি। তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের হাতে দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয় ২০টি কাউন্টার। মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয় প্রস্তুতি। জামসেদপুর থেকে আসেন কারিগর। রানিগঞ্জের ৩০ কারিগর সহযোগিতা করেন। বুধবার সকল ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চলছে সাজ সাজো রব। পোড়া কয়লার আগুনে সেকে চলে লিট্টি। সেই লিট্টি গাওয়া ঘিয়ে ভিজিয়ে পরিবেশন করা হয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উৎসবে আসার আগেভাগেই সমস্ত পদ তৈরি করে নেওয়া হয়।
রানীগঞ্জের এক ক্যাটারিং সংস্থা এই লিট্টি চোখা তৈরির বরাত পায়। লিট্টি চোখার মান যাতে ঠিক থাকে তার জন্য চলে ঘন ঘন পরীক্ষা-নিরীক্ষা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চ ছাড়ার পরই দেখা যায় ১৫ হাজার লিট্টি শেষ। তৃণমূল কর্মীরা জানান মঙ্গলবার বৃষ্টির পর ঠান্ডা আবহাওয়া আর তাতেই চাহিদা বেড়ে যায় লিট্টি চোখার। যদিও সাত আট হাজার মানুষ এদিন কাউন্টারের মাধ্যমে লিট্টি চোখা স্বাদ গ্রহণ করেন নির্বিঘ্নে।