রানিগঞ্জ: খাবার খেতে ইচ্ছে করছে না। ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমোতে হচ্ছে। মন জুড়ে শুধুই উদ্বেগ। এমন অবস্থাতেই দিন কাটাচ্ছেন ব্যবসার সূত্রে বাংলায় থাকা আফগানরা। ফোন কিংবা ইন্টারনেটে যোগাযোগ করারও উপায় নেই। দেশ তালিবান শাসনে চলে যাওয়ার পর থেকে এমনই উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন রানিগঞ্জে থাকা তিন আফগান।
রানিগঞ্জের হিলবস্তি এলাকায় অনেক দিন ধরেই থাকেন পারভেজ খান, কাদের খান ও সেলিম খান। প্রায় ৫০ বছর ধরে আসা যাওয়া করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। যাওয়া-আসা করতেন দেশে। মাঝ এমধ্যে পরিবারের সঙ্গে দেখা করে আসতেন। কিন্তু আফগানিস্তান তলিবান দখলে চলে যাওয়ার পর থেকেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে এই তিন ব্যবসায়ীর। গত কয়েকদিন ঠিক মতো খেতে পারছেন না তাঁরা। না ঘুমিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন, তাই ঘুমের ওষুধ এনে খাচ্ছেন।
পারভেজ খান, কাদের খান ও সেলিম খান নামে ওই তিন ব্যবসায়ী অনেক বছর ধরে এই অঞ্চলে বসবাস করলেও আফগানিস্তানেই থাকেন তাঁদের পরিবার, আত্মীয় -পরিজনেরা। রাতারাতি এ ভাবে তালিবানদের দখলে চলে যাবে গোটা দেশ, তা ভাবেননি তাঁরাও। গত ছ’দিন ধরে পরিবারের সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে্ছে। বন্ধ মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবাও। এমতাবস্থায় পরিবারের কারও কোনও খোঁজ পাচ্ছেন না রানিগঞ্জের হিলবস্তি এলাকার এই তিন বাসিন্দা। একটা বাড়ি ভাড়া করেই থাকেন তাঁরা।
বাড়ির ভিতরে লাগানো রয়েছে আফগানিস্তানের পতাকা। মোবাইল ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে তাঁরা খুঁটিনাটি খবর পাচ্ছেন কাবুলের। দুশ্চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে। যত বেশি ঘটনা ঘটছে, ততই উদ্বেগ বাড়ছে। পরিবারের লোকজনেরা বেঁচে আছেন না মারা গেছেন সেই প্রশ্নটা তাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।
চুঁচুড়াতেও দেখা গিয়েছে এমন ছবি। পরিজনদের খোঁজ পাননি সেখানে বসবাসকারী আফগানরাও। কেউ বা আত্মরক্ষার্থে ফিরে এসেছেন বাংলার মাটিতে। ব্যবসা ফেলে নিজের দেশে ফিরতে পারেননি কেউ কেউ। কলকাতায় দেড় থেকে দু’ হাজার আফগান রয়েছেন। বাঙালিদের চোখে যাঁরা কাবুলিওয়ালা। রয়েছেন রাজধানী দিল্লিতেও।
আরও পড়ুন: রাতারাতি ইন্টারনেট থেকে উধাও তালিবানের ওয়েবসাইট! বন্ধ করা হল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও