দুর্গাপুর: দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (SBSTC) কয়েক কোটি টাকা টাকা তছরূপের অভিযোগ উঠল এক বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে টিকিট বিক্রি করেছে ওই বেসরকারি সংস্থা। এর জেরে ৭ কোটি ১৯ লক্ষ ১০ হাজার ৬৪৬ টাকার টিকিট বিক্রির টাকা জমা পড়েনি দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার দফতরে। এ নিয়েই দুর্গাপুরের কোকওভেন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের একটি বেসরকারি সংস্থা ২০০৩ সাল থেকে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার লগিন আইডি এবং পাসওয়ার্ডের অপব্যবহার করে এই কাজ করে আসছে বলে অভিযোগ। এর জেরে ৭ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে পরিবহণ সংস্থার। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগম বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার সতর্ক করেছিল ওই বেসরকারি সংস্থাকে। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। এর পর ২৩ নভেম্বর অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এই বিষয়টি সামনে আসতেই দুর্নীতির অভিযোগ সরব কংগ্রেস, সিপিআইএম এবং বিজেপি। সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে যোগসাজস করেই এই আর্থিক দুর্নীতি করা হয়েছে বলে দাবি বিরোধী দলগুলির। বিজেপির জেলা সহ সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় ইডি ও সিবিআইকে দিয়ে এই আর্থিক তছরূপের তদন্তের দাবি করেছেন। জেলা কংগ্রেস নেতা দেবেশ চক্রবর্তী বলেছেন, “এই বিষয়টি আজকের না, অনেকদিনের। এত কোটি টাকার তছরূপ জানা সত্ত্বেও সরকার এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। যারা এই তছরূপ চালাচ্ছে, তাঁরা মাফিয়া ছিলেন। এখনও ওই সংস্থা এসবিএসটিসি-র কাউন্টারে বসে পয়সা খাচ্ছে।” সিপিআইএম জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেছেন, “এই যে দুর্নীতি হয়েছে তা অডিটে কেন ধরা পড়ল না। শুধু এই দুর্নীতি নয়, এসবিএসটিসি-তে গ্যারাজে, তেলে, রক্ষণাবেক্ষণেও দুর্নীতি আছে। কারা করছে এ সব? এ জন্য কর্মী, ঠিকাকর্মীদের বেতন হয় না। অদ্ভুত ব্যাপার চলছে।”
এ বিষয়ে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান সুভাষ মণ্ডল জানিয়েছেন, সংস্থার নিজস্ব তদন্তে বেনিয়ম পাওয়া গেছে। তাই থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেছেন, “এই ঘটনা তদন্ত হলে দোষীরা শাস্তি পাবে।” অন্যদিকে তছরূপে অভিযুক্ত বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে তনয় মণ্ডল অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে বলেছেন, “সবটাই কম্পিউটারে যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য হয়েছে।” কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে যে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তোলা হচ্ছে সেটা ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেন তিনি।