আসানসোল: গরু পাচার মামলায় তিহাড়ে রয়েছেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। দিল্লির জেল থেকেই আসানসোল সিবিআই আদালতে ভার্চুয়ালি হাজিরা দেন কেষ্ট মণ্ডল। এ দিন, বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর কাছে রাইসমিলের জিনিসপত্র চুরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তৃণমূল নেতা। একই সঙ্গে অনুব্রতর দাবি তাঁর অনুপস্থিতিতে প্রচুর জিনিস নষ্টও হয়ে যাচ্ছে। সঙ্গে নিজের শারীরিক অবস্থা ভাল নেই বলেও জানান অনুব্রত। শুধু কেষ্ট মণ্ডল নন, ভার্চুয়াল শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন গরু পাচার মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সায়গল হোসেনও।
আজ আসানসোল সিবিআই আদালতে বিচারক ও অনুব্রতর কথোপকথন এক নজরে…
রাজেশ চক্রবর্তী (বিচারক): আপনাকে খুব ক্লান্ত লাগছে অনুব্রতবাবু। কেমন আছেন ?
অনুব্রত মণ্ডল : শরীর ভাল নেই। সব রকম অসুবিধা হচ্ছে।
বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী : ডাক্তার দেখছে তো ?
অনুব্রত মণ্ডল : ডাক্তার দেখাচ্ছি। জেলের মেডিক্যাল ওয়ার্ডে পড়ে আছি। শরীর একেবারেই ভাল নেই।
বিচারক: বুঝতে পারছি।
(সায়গল হোসেনের উদ্দেশ্যে বিচারক)
বিচারক: সায়গল তোমার গহনার রিপোর্ট অর্ধেক এসেছে।
সায়গলের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারক : গহনার রিপোর্টটা কী হল ?
সায়গলের আইনজীবী : তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছি।
বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী (সায়গলের উদ্দেশ্যে) : আমি বিষয়টি দেখছি। অনেকদিন ধরেই পেন্ডিং আছে। এবার দ্রুত ব্যবস্থা হবে।
তদন্তকারী অফিসারদের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর সায়গলের আইনজীবী বলেন: স্যর তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে কথা হয়েছে। পরবর্তী শুনানির দিনই সম্পূর্ণ রিপোর্ট জমা করা হবে।
অনুব্রত মণ্ডল (বিচারকের উদ্দেশ্যে) : স্যর রাইস মিলে চুরি হচ্ছে। মিলের দু’টি অ্যাকাউন্ট যেন খুলে দেওয়া হয়। শ্রমিকরা পেমেন্ট পাচ্ছেন না। ২০০ শ্রমিক রয়েছে। বহু জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে।
বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী : আপনার মুখের কথায় আমি কোনও অ্যাকাউন্ট তো খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারি না। আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করুন। আপনার ও সিবিআই দু’পক্ষের কথা শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অনুব্রতর আর্জি শোনার পর বিচারক কেষ্টর আইনজীবীকে আবেদনের জন্য বিষয়টি জানান। ৭ই জুন পরবর্তী শুনানি। তবে প্রোডাকশন চূড়ান্ত হওয়ার পরেও বিচারক গরু পাচার মামলার কেস ডাইরি দেখতে চান। দু’পাতা উল্টানোর পরই তাঁর চোখ দীর্ঘক্ষণ আটকে যায় কেস ডাইয়েরিতে। সঙ্গে-সঙ্গে জানতে চান আবদুল লতিফের পরবর্তী মামলা কবে রয়েছে? আইনজীবী জানান, ২০ মে। উল্লেখ্য, এদিন বিচারক অর্ডার কপিতে তিহাড়ের জেল সুপারকে অনুব্রত মণ্ডলকে সব রকম চিকিৎসা সংক্রান্ত সাহায্য করার নির্দেশ দেন। ই-মেইল করে সেই নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয় তিহাড়ে।