আসানসোল: হাইকোর্টে ধাক্কা খাওয়ার পর আসানসোল সিবিআই আদালতে আর জামিনের আর্জি করলেন না বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এদিন শুনানি শেষে আসানসোল বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠান অনুব্রতকে। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৯ জানুয়ারি। বুধবার সকাল ১১টা ৪৬ মিনিটে আসানসোল বিশেষ আদালতে পেশ করা হয় অনুব্রতকে। বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর এজলাসে তাঁকে পেশ করা হয়। অনুব্রতর হয়ে এদিন সওয়াল করেন আইনজীবী সোমরাজ চট্টরাজ। তবে জামিনের জন্য সওয়াল করেননি। বরং আগের দিনের শুনানি অনুযায়ী, এদিন ভোলেব্যোম রাইস মিলের কিছু নথি জমা দেওয়ার কথা ছিল আদালতে। অনুব্রতর তরফে আইনজীবী বলেন, সেই পর্যাপ্ত পরিমাণ নথি ও তথ্য তিনি জোগাড় করে উঠতে পারেননি। সেটি জমা দেওয়ার জন্য পরের শুনানির দিন ধার্য করা হোক। আদালত তা মঞ্জুর করে।
অনুব্রতর আইনজীবীর তরফে সওয়াল করা হয়, অনুব্রতর বাজেয়াপ্ত হওয়া ২টো ফোন তাঁদের ফেরত দেওয়া হোক। সে সময় এই মামলার তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য বলেন, ওই দুটি ফোন এখন সিবিআই-এর মালখানায় রয়েছে। সেগুলি এখন ফেরত দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ নথি স্ক্যান করা হচ্ছে। সেসময় বিচারপতি অনুব্রতর আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, “ফোন পেতে চাইলে আপনারা লিখিত আকারে আবেদন করুন। সেটা নিয়ে আলোচনা হবে।”
এরপর বিচারক তদন্তকারী অফিসারের কাছে শেষ ১৪ দিনের তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানতে চান। একটি রিপোর্ট জমা দেন তদন্তকারী অফিসার। বিচারক তাঁকে কাছে ডেকে জানতে চান, এই রিপোর্ট কি চতুর্থ চার্জশিট জমা দেওয়ার পরের ‘আপডেট’? কিছুক্ষণ এ বিষয়ে আলাপচারিতা চলে বিচারক এবং আইনজীবীর মধ্যে। উল্লেখ্য এই মামলায় চতুর্থ চার্জশিটে ৯৩ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড ছিল। এই নতুন রিপোর্টে আরও ৪৭ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এরপরই বিচারক এই মামলার পরের তারিখ ১৯ জানুয়ারি বলে জানিয়ে দেন বিচারক।
প্রসঙ্গত ২৮ দিন পর আসানসোল সিবিআই আদালতে হাজিরা দেন অনুব্রত মণ্ডল। গরু পাচার মামলায় গত ২২ ডিসেম্বর আসানসোল সিবিআই আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল অনুব্রত মণ্ডলের। কিন্ত ওইদিন কোনও শুনানি হয়নি। কারণ আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগার থেকে সিবিআই আদালতকে জানানো হয় দুবরাজপুরে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন অনুব্রত। তাই আদালতে হাজির করানো যাবে না। অন্যদিকে বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীও ওইদিন ছিলেন ছুটিতে। আবার অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবি ওইদিন আসেননি। সিবিআই আইনজীবি ও সিবিআই আইও সুশান্ত ভটাচার্য-সহ অন্য আধিকারিকরা অবশ্য আদালতে আসেন। ওইদিন কেসডায়েরিও তাই জমা হয়নি। ফলে ১৪ দিন পর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়।
শেষবার গত ৯ ডিসেম্বর সিবিআই আদালতে সশরীরে হাজির হয়েছিলেন কেষ্ট মণ্ডল। ওইদিন শুনানি হয়েছিল। গত ১৭ নভেম্বর শ্যোন অ্যারেস্ট হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডল ইডির কাছে। তারপর থেকে সিবিআই আদালতে কিন্তু তার আইনজীবী একবারের জন্যও জামিনের আবেদন করেননি। এই সময় হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করে মামলা শুরু হয়।