আসানসোল : চারদিনের সিবিআই হেফাজত, বা বলা ভাল দু দফায় ১৪ দিনের সিবিআই হেফাজত শেষ বীরভূমের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলের। গত কয়েকদিন ধরে নিজাম প্যালেসে দফায় দফায় জেরা করা হয়েছে তাঁকে। আর বুধবার আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে পৌঁছে নিজেই সরাসরি বিচারকের সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে গেলেন অনুব্রত। এ দিন তিনি পৌঁছনোর আগেই তাঁর জামিনের আর্জি জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী। তবে বিচারকের কাছে গিয়ে হুমকি চিঠি নিয়েই কথা বললেন অনুব্রত।
এ দিন অনুব্রত মণ্ডল আদালতে পৌঁছনোর পরই আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেন। আদালত কক্ষে ঢুকে তাঁর আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলতে দেখা যায় অনুব্রতকে। বিচারকের সঙ্গে কথা বলতে পারেন কি না, তা জানতে চান আইনজীবীর কাছে।
এ দিন আদালত কক্ষে একটি বেঞ্চে বসেছিলেন অনুব্রত। কিছুক্ষণ পর দেখা যায় চেয়ার থেকে উঠে সোজা বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর দিকে এগিয়ে যান তিনি। বিচারককে হাত জোড় করে বলেন, ‘হুজুর কাল টিভিতে যা দেখেছি, তার তদন্ত করুন।’ তবে বিচারক তাঁকে বলেন, ‘এটা আমার কেস, এটা কোনও পক্ষ মেনশন করবেন না। কোনও আলোচনা করবেন না। আমরা আইনের লোকেরা, আইন বলবৎ করতে জানি।’ বিচারক আরও উল্লেখ করেন, এই বিষয় এজলাসে উত্থাপিত করা হলে তিনি মামলার পার্টি হয়ে যাবেন, তাই বিষয়টা যাতে উত্থাপন না করা হয়, সেই অনুরোধ জানান তিনি।
সম্প্রতি সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁর কাছে একটি হুমকি চিঠি এসেছে। যাতে বলা হয়েছে, অনুব্রতকে জামিন না দেওয়া হলে বিচারক ও তাঁর পরিবারকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে। সেই হুমকি চিঠি নিয়ে যখন রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল শুরু হয়েছে, তখন অনুব্রত সেই ঘটনায় তদন্তের আর্জি জানালেন বিচারককে।
মঙ্গলবার এই চিঠির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে অনুব্রত বলেছিলেন, ‘এটা বিজেপি করেছে।’ আর বুধবার সকালে নিজাম প্যালেস থেকে বের করে যখন তাঁকে আসানসোলের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়, তখনই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন, এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের আর্জি তিনি জানাবেন বিচারকের কাছে। তাই আদালত কক্ষে প্রবেশ করেই তদন্তের আর্জি জানালেন তিনি।