আসানসোল: অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার ৫৭ দিন পর জমা পড়ল গরু পাচার মামলার নতুন চার্জশিট। গত কয়েকদিন ধরে যে তদন্ত চলেছে, জেলে গিয়ে অনুব্রতকে জেরা করে যা জানা গিয়েছে, সেই সব তথ্যের উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে। সূত্রের খবর, মোট ৯৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যে বয়ান পাওয়া গিয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করেই এই চার্জশিট তৈরি করা হয়েছে।
সিবিআই সূত্রে খবর, ওই চার্জশিটে অনুব্রতকে গরু পাচার মামলার মূল পৃষ্ঠপোষক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কী ভাবে গরু পাচার মামলায় অনুব্রত রাজনৈতিক সুরক্ষা দিতেন, সে কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। অনুব্রত পৃষ্ঠপোষকতাতেই যে বীরভূম জুড়ে পাচার চক্রের রমরমা চলছিল, তেমনটাই জানতে পেরেছে সিবিআই।
পাচারের টাকা দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের হাত ঘুরে অনুব্রত মণ্ডলের হাতে যেত অভিযোগ উঠেছে আগেই। এবার চার্জশিটে উল্লেখ করা হল অনুব্রতর বিপুল সম্পত্তির কথা। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুব্রতর নামে থাকা ১৮ কোটি টাকার উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে। উল্লেখ করা হয়েছে ৫৩ কোটির সম্পত্তিরও। কোনও প্রশাসনিক পদে না থেকেও একজন তৃণমূল নেতার এত সম্পত্তি কী ভাবে হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আয়ের সঙ্গে যে সঙ্গতি নেই, সেই উল্লেখও করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এর আগেও গরু পাচার মামলার আরও একটি চার্জশিটে সায়গল হোসেনের সঙ্গে অনুব্রত নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। এই মামলায় মূল অভিযুক্ত এনামুল হোসেন গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁকে জেরা করে সিবিআই জানতে পেরেছিল, সায়গল হোসেনের মাধ্যমে গরু পাচারের টাকা যেত অনুব্রতর হাতে। পরে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর বীরভূমে গিয়ে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। অনুব্রতর জমি, চালকলের উল্লেখ চার্জশিটে রয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এই প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী দাবি করেছেন, চার্জশিটে রসদের কোনও অভাব হবে না। এত চুরি হয়েছে যে, চার্জশিট বানানো যাবে সহজেই।
এ দিকে, একই মামলায় আসানসোল জেলে গিয়ে জেরা করা হতে পারে সায়গল হোসেনকে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বলে সূত্রের খবর। কোন পথে গরু পাচারের টাকা লেনদেন হত, সেই সংক্রান্ত তথ্য খোঁজার জন্যই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে ইডি।