আসানসোল: সালানপুরের যুবতী খুনের ঘটনায় গ্রেফতার ভিক্ষাদাদা। মিঠু রায় (৩৪) খুনে গ্রেফতার তাঁরই ভিক্ষাদাদা লাল্টু চট্টোপাধ্যায়। লাল্টুকে গ্রেফতারের পর সালানপুর থানার পুলিশ ধৃতকে আদালতে পাঠায়। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে জানতে পেরেছে, সম্পত্তির জেরেই এই ঘটনা।
বৃহস্পতিবার সকালে সালানপুর থানার মাধাইচক থেকে বোলকুণ্ডা যাওয়ার রাস্তার পাশ থেকে মিঠু রায়ের অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় মানুষজন ধর্ষণের কথা বলেও মৃতদেহটি ময়না তদন্তের পরে জানা যায়, কোনওরকমে শারীরিক নিগ্রহের ঘটনা ঘটেনি। সেরকম কোনও অত্যাচারেরও চিহ্ন তাঁর শরীরে পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে মিঠুকে।
মিঠু রায়ের বাবা দামোদর রায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরেই পুলিশ তদন্ত নেমে মিঠু রায়ের মোবাইল ফোনের কল ডিটেইলস বের করে। জানা যায়, বোলকুণ্ডা গ্রামের বাসিন্দা মিঠুর ভিক্ষাদাদা লাল্টু চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সব থেকে বেশি কথাবার্তা হয়। পুলিশ লাল্টুকে সন্দেহের জেরে গ্রেফতার করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের জেরে লাল্টু স্বীকার করে দামোদর রায়ের সম্পত্তি নিয়ে তাঁর সঙ্গে মিঠুর দীর্ঘদিন ধরে একটা বচসা চলছিল। যেহেতু দামোদরের সব সম্পত্তির হিসাব-নিকাশ বহুদিন ধরেই লাল্টু রাখছিল।
মিঠু যত বড় হচ্ছিল সেই হিসাব নিকাশ সে নিজেই চাইছিল। এবং এই নিয়ে অশান্তি সৃষ্টি হয়। দামোদর আগেই ঘোষণা করেছিল তাঁর সম্পত্তি সমান দু’ভাগে ভাগ হবে। তাতে আপত্তি ছিল মিঠুর। কিন্তু মিঠু ও লাল্টু দুজনেই সম্পূর্ণ সম্পত্তির অধিকার চাইছিল। মিঠু তাঁর সমস্ত খরচ লাল্টুকেই দিতে বাধ্য করতো।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে মঙ্গলবার মিঠু রায় বাড়ি থেকে পিকনিকের নামে বেরোলেও সে প্রথমে যায় লাল্টুর পাহাড়গোড়ার বাড়িতে। সেখানে খরচ বাবদ টাকার দাবি করে। এই নিয়েই মিঠুর সঙ্গে তাঁর প্রথমে ঝগড়া, তারপর হাতাহাতির সৃষ্টি হয়। রাগের বশে মিঠুর মুখ চেপে ধরে লাল্টু। তারই জেরে মৃত্যু হয় মিঠুর। তারপর মৃত দেহটি নিয়ে টেম্পুতে করে নিয়ে গিয়ে বোলকুন্ডার রাস্তার পাশেই জঙ্গলে ফেলে পালিয়ে যায় লাল্টু। পুলিশের দাবি, লাল্টু গোটা বিষয়টি জেরায় স্বীকার করেছে।