Asansol: দশ বছর ধরে একই ব্যক্তিকে টেন্ডার ছাড়াই টোলপ্লাজার বরাত, কঠাগড়ায় জেলা পরিষদ

Chandra Shekhar Chatterjee | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Nov 17, 2024 | 4:11 PM

Asansol: এদিকে রূপনারায়ণপুর টোল আদায় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ঝাড়খন্ড থেকে ক্রমাগত বাংলায় যেমন গাড়ি ঢুকছে তেমনই বাংলা থেকে ঝাড়খন্ডেও সমস্ত ধরনের গাড়ির চলাচল বজায় আছে। তাদের মধ্যে অনেক চালকই বলছেন টাকা দিলেও তাদের রশিদ দেওয়া হয়নি।

Asansol: দশ বছর ধরে একই ব্যক্তিকে টেন্ডার ছাড়াই টোলপ্লাজার বরাত, কঠাগড়ায় জেলা পরিষদ
টেন্ডার দেওয়া নিয়ে অশান্তি
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

আসানসোল: দশ বছর ধরে টেন্ডার ছাড়াই চলছে জেলা পরিষদের টোল প্লাজা। বিতর্ক তৈরি হয়েছে সালানপুরের ঝাড়খণ্ড-বাংলা সীমানার পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের রূপনারায়ণপুর টোল প্লাজা নিয়ে। দাবি উঠেছে সরকারি নিয়ম মেনে টেন্ডারের মাধ্যমে টোল প্লাজা চালানোর ব্যবস্থা হোক। অভিযোগ এই টোল প্লাজা থেকে যে পরিমাণ টাকা আদায় করা হচ্ছে তা সরকারি কোষাগারে জমা পড়ছে না ঠিকমতো।

শেষবার ২০১৩ সালের ২৬ নভেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত টেন্ডারের তথ্য জেলা পরিষদের কাছে আছে। সেই সময় ওই এক বছরের জন্য টেন্ডারের অর্থ মূল্য ছিল ২২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। তারপর আর নতুন করে এই দীর্ঘ ১০ বছরে টেন্ডার হয়নি। তবে সময় সময়ে পুরানো ওই এজেন্সিকেই কিছুটা বেশি অর্থের বিনিময়ে এই টোল প্লাজায় টাকা আদায়ের দায়িত্ব জেলা পরিষদ দিয়ে রেখেছে বলে খবর। ‌

কিন্তু কেন ওপেন টেন্ডার বা ই টেন্ডার না করে নির্দিষ্ট একটি সংস্থাকেই বছরের পর বছর টোল আদায়ের দায়িত্ব দিয়ে রাখা হয়েছে? সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেও উত্তর না পেয়ে গোবর্ধন মণ্ডল নামক স্থানীয় এক ব্যক্তি তথ্যের অধিকার আইনে আবেদন করতেই পুরো বিষয়টি সামনে আসে। আরটিআইয়ের উত্তরে ওই বছরের ২২ জানুয়ারি জেলা পরিষদের এসপিআইও তথা সেক্রেটারি জানিয়েছেন ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর যে টেন্ডার হয়েছিল তারই একমাত্র নথিপত্র জেলা পরিষদের কাছে আছে।

এছাড়া নতুন করে লিজ- সংক্রান্ত কোন তথ্য, রেফারেন্স নাম্বার মেমো কিছুই তাদের কাছে নেই। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের মেন্টর তথা রাজ্য তৃণমূল সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন,  রূপনারায়ণপুর টোল প্লাজার বিতর্ক নিয়ে প্রথম থেকেই তিনি শুনে আসছেন। সরকারের ঘরে যাতে দু টাকা বেশি আসে সেই বিষয়টি তিনি দেখবেন জানিয়েছেন।
‌অন্যদিকে বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় বলেন বিষয়টি সভাধিপতির কাছ থেকে জেনে মন্তব্য করতে পারবেন।

এ প্রসঙ্গে টোলপ্লাজার অদূরেই থাকা জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ আরমান বলেন, বিনা টেন্ডারে রূপনারায়ণপুর টোল আদায় কেন্দ্র চলছে না, তবে রি-টেন্ডার হয়নি। টেন্ডার এক্সটেনশন করা হয় সময় সময়। এই বিষয়টিকে দুর্নীতি বলেই দেগে দিয়েছেন বিজেপির আসানসোল জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আরটিআই মারফত বিষয়টি জানার পরেই নড়াচড়া শুরু হয়েছে, কিন্তু এতদিন প্রশাসন চুপ ছিল।”

এদিকে রূপনারায়ণপুর টোল আদায় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ঝাড়খন্ড থেকে ক্রমাগত বাংলায় যেমন গাড়ি ঢুকছে তেমনই বাংলা থেকে ঝাড়খন্ডেও সমস্ত ধরনের গাড়ির চলাচল বজায় আছে। তাদের মধ্যে অনেক চালকই বলছেন টাকা দিলেও তাদের রশিদ দেওয়া হয়নি। আবার কেউ কেউ জানাচ্ছেন ছোট চার চাকার গাড়ি পারাপারের জন্য ৩০ টাকা করে নিয়ে রশিদ দেওয়া হচ্ছে। জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণে থাকা টোল প্লাজায় এতো বেশি টাকা নেওয়া হয় না। তবে, সমস্ত বিষয়টিতে জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরির মতে, সাবেক বর্ধমান জেলা ভেঙে পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলা হাওয়াকে অসুবিধার কারণ বলে মনে করছেন। তিনি বলেন, “জেলা ভাগ হওয়ার পর পূর্ব বর্ধমান থেকে সমস্ত নথিপত্র না পাওয়ার জন্যই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৪’র এগ্রিমেন্টের নথিপত্র পুরনো জেলায় রয়ে যাওয়ায় তারা এখানে নতুন করে টেন্ডার ডাকতে পারেননি। ‌ সেজন্য বিধি অনুযায়ী প্রতিবছর ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করে টাকা নেওয়া হচ্ছে ঠিকাদারের কাছ থেকে। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারের কাছ থেকে এখনও প্রায় এক কোটি টাকা বকেয়া অর্থ জেলা পরিষদ পাবে।”

Next Article