আসানসোল: আবারও অস্ত্র কারখানার হদিশ। ডিসেরগড়ের পর এবার হীরাপুরে (Hirapur) মিলল বেআইনি অস্ত্র কারখানার (Arms Factory) হদিশ। হীরাপুর থানার রহমতনগর নয়াবস্তি এলাকায় অস্ত্র কারখানার খোঁজ পায় পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, সোমবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়।
জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় একটি বাড়ির মধ্যেই পাতাল ঘরে তৈরি করে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করা হত। এদিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হীরাপুর থানার পুলিশ পৌঁছে অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির সরঞ্জামগুলি উদ্ধার করে। তবে কতগুলি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বা কোন জাতীয় অস্ত্র তৈরির যন্ত্র উদ্ধার হয়েছে, তদন্তের স্বার্থে পুলিশ এখনই প্রকাশ্যে আনেনি।
এমনকি মূল অভিযুক্তের নামও প্রকাশ্যে আনেনি। ঘটনাস্থলে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি ওয়েস্ট অভিষেক মোদী পৌঁছন। তিনি জানান, এই ঘটনায় দু’জন আটক করা হয়েছে। বাড়ির মালিক মহম্মদ জাভেদ পলাতক। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। পাড়ার মধ্যেই যে এই ভাবে অস্ত্র কারখানা চলছে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তাঁরা, বলছেন স্থানীয় বাসিন্দারাই।
একটা বাড়ির নীচে যে পাতাল ঘর রয়েছে, সেটা জেনেই হতবাক প্রতিবেশীরা। ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি তোলেন তাঁরা। উল্লেখ্য, দে়ড়মাস আগেই কুলটি থানার বরাকরের বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানা এলাকায় নাকা চেকিংয়ের সময় ২৫ টি ৭ এমএম পিস্তল ও ৪৬ টি ম্যাগাজিন সহ আস মহম্মদকে নামে স্থানীয় এক গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই সূত্র ধরে প্রথমে ডিসেরগড়ে ও এবার হীরাপুরে অস্ত্র কারখানার হদিশ মিলল।
চলতি মাসের শুরুতেই কুলটির (Kulti) দিশেরগড়ে অস্ত্র কারখানার হদিশ পান তদন্তকারীরা। অভিযান চালিয়ে ওই গোপন কারখানা থেকে সাতটি তৈরি ৭.৬২ পিস্তল, ২০টি অসম্পূর্ণ পিস্তল, ১৪টি তৈরি ম্যাগাজিন আর পাঁচটি অসম্পূর্ণ ম্যাগাজিন, ১৩ রাউন্ড গুলি ও অন্যান্য কিছু অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তবে এই কারখানায় অস্ত্র পাচারের কারবার ছড়িয়ে ভিনরাজ্যেও বলে দাবি করেছেন গোয়েন্দা কর্তারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৩ সেপ্টেম্বর নাকা চেকিংয়ের সময়ে বরাকর চেকপোস্টে বিপুল অস্ত্র-সহ ধরা পড়েছিলেন আশ মহম্মদ নামে এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তিকে জেরা করে উঠে আসেএকের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, যোগীরাজ্য উত্তর প্রদেশেও ছড়িয়ে রয়েছে এই অস্ত্র কারবারের জাল।
নাকা চেকিংয়ে ধৃত আশ মহম্মদের থেকে প্রথমে উদ্ধার হয়েছিল মোট ২৬টি পিস্তল আর ৪৬টি ম্যাগাজিন। তাকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের পর এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদের দুই ব্যক্তির সম্পর্কে জানতে পারে পুলিশ। আনওয়ার খান রশিদ ও আফতাব খান নামে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করা হয়। তিনজনকে জেরা করার পর কুলটির পুলিশ ঝাড়খণ্ডে একটি অভিযান চালায় স্থানীয় পুলিশের সাহায্যে। সেখান থেকেও উদ্ধার হয় আরও অস্ত্র।
আরও পড়ুন: গোয়ায় চায়ের দোকানে বসে লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি মমতার, ‘কুঁজোর-ও চিৎ হয়ে শোয়ার ইচ্ছে’ কটাক্ষ শুভেন্দুর