আসানসোল: বান্ধবীকে নিয়ে গিয়েছিলেন হোটেলে। তার কিছুক্ষণ পরই উদ্ধার হয়েছিল যুবকের দেহ। সেই ঘটনায় অবশেষে গ্রেফতার হলেন মৃত যুবকের ওই বান্ধবী। অভিযুক্তের নাম সাবানা পরভিন ওরফে জয়নাভ খাতুন। শনিবার রাত্রিবেলা আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ গ্রেফতার করে তাঁকে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত সাবানা পরভিন কলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তাঁর বাড়ি কুলটি থানা এলাকার নিয়ামতপুরের আকনবাগানে। রবিবার ধৃতকে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজত চেয়ে আসানসোল আদালতে তোলা হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক তাঁর জামিন নাকচ করে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত, নিয়ামতপুরের চক্রবর্তী পাড়ার বাসিন্দা বছর একুশের যুবক রোহন প্রসাদ রামের সঙ্গে সাবানার সম্পর্ক ছিল। গত ২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে আসানসোলের জিটি রোডের কুমারপুরে একটি হোটেলের রুম বুক করেন যুবক যুবতী। ৩০৬ নম্বর রুমে ওঠেন তাঁরা। পরের দেন হোটেলের দরজা ভেঙে উদ্ধার হয় দেহ। মৃতের কপালের ঠিক মাঝখানে একটা ক্ষতচিহ্ন পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তের পরে বিষয়টি জানতে পারে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সাবানাকেও। সেই সময় অভিযুক্ত যুবতী জানান, তিনি ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
এরপর সেই দাবির সত্যতা যাচাই করতে পুলিশ হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেন। আসানসোল জেলা হাসপাতালে হয় মৃতদেহের ময়নাতদন্ত । তাতে একটি রিভলভারের গুলি তার মাথার পিছন থেকে পাওয়া যায়। সেই গুলি পুলিশ জেলা হাসপাতালের মর্গ থেকে সিজ করেছিল। হোটেলের রুম থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করার সময়ও ছাত্রের কাছ থেকে একটি রিভলভারও পান পুলিশ আধিকারিকরা। এমনকী একটি হ্যান্ড ব্যাগও মেলে সেখান থেকে। পুলিশ জানিয়েছে, রোহনের ফোনটি সেই ব্যাগের ভিতরেই ছিল। সেটিকেও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেন তাঁরা। সেই রিভলভার ও গুলির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়।
আসানসোলের এই গুলিকান্ডে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশকে তদন্তে সাহায্য করে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিডি বা গোয়েন্দা দফতর। বুধবার বিকেলে ঐ হোটেলে আসেন দূর্গাপুরের ফরেনসিক ( আরএফএসএল) টিমের সদস্যরা। মৃত যুবকের বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এই যুবতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে খুনের মামলা করা হয়েছে। এই ঘটনার পেছনে সম্পর্কের টানাপোড়েন না অন্য কিছু আছে তা ধৃতকে জেরা করে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।