আসানসোল : মাসে ডবল বেতন। অর্থাৎ, প্রতি মাসে দু’টি করে বেতন তুলছিলেন একই কর্মী। অভিযোগ, আসানসোল পুরনিগমের এক মহিলা ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্টের বিরুদ্ধে। আসানসোল পুরনিগমের সদর দফতর অফিস ও রানিগঞ্জ বরো অফিস থেকে বেতন পাচ্ছিলেন তিনি। কংগ্রেস কাউন্সিলরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি নজরে আসে আসানসোল পুরনিগমের। তারপরেই শুরু হয় তদন্ত। শোকজ করা হয় ওই মহিলা পুরকর্মীকে। কংগ্রেস কাউন্সিলরের অভিযোগ, গত ২১ মাস ধরে রানিগঞ্জ বরো অফিস এবং আসানসোল পুরনিগমের সদর দফতর – একইসঙ্গে দুই জায়গা থেকে বেতন পাচ্ছিলেন ওই মহিলা কর্মী।
তিনি চুক্তি ভিত্তিতে ২০২০ সালে আসানসোল পুরনিগমের সদর দফতরে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। কয়েকদিন পর তাঁকে রানিগঞ্জ বরোতে চুক্তি ভিত্তিক কর্মী হিসেবে ট্রান্সফার করা হয়। ফলে বরো দফতর থেকে যেমন তাঁর বেতন ওঠানোর জন্য ওয়ার্কিং স্টেটমেন্ট আসছিল, তেমনই পুরনিগমের সদরে বেতনের তালিকাতেও তাঁর নাম ছিল। প্রতি মাসেই তিনি একসঙ্গে দু’বার করে টাকা পেতেন বলে অভিযোগ। প্রতি মাসে দশ হাজার করে ডবল বেতন পেতেন তিনি। কীভাবে দুই জায়গা থেকে ওয়ার্কিং স্টেটমেন্ট আসছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে পুরনিগমের মেয়র, চেয়ারম্যান এবং দুই প্রস্তাবিত ডেপুটি মেয়র, ফাইন্যান্স অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা হয়।
পরে মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, “আমি জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেছি। তবে ওই মহিলা ক্যানসার আক্রান্ত বলে মানবিক দিক বিচার করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়নি। শোকজ করা হয়েছে। ওই ২১ মাসের বেতন ফেরত চাওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই মহিলা চার কিস্তিতে মাসে ১০ হাজার করে নেওয়া তাঁর ২১ মাসের অতিরিক্ত বেতন (যার মোট অঙ্ক ২ লাখ ১০ হাজার টাকা) ফেরত দিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে এই ঘটনার পর থেকেই ওই মহিলা পুরকর্মীও কোনও পাত্তা পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য দিন কয়েক আগে পুরনিগমের প্রাক্তন বরো চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর গুলাম সরবর পুরনিগমের একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে চিঠি দেন মেয়র এবং পুরকমিশনারকে। পুরনিগমের এই সব অনৈতিক কাজ দেখার জন্য একাধিক উচ্চপর্যায়ের আধিকারিকরা থাকলেও তাঁরা যে এসব বিষয়ে প্রায় নীরব, এমনই অভিযোগ উঠেছিল। পুরনিগমের বিরোধী দলনেত্রী তথা বিজেপি কাউন্সিলর চৈতালি তেওয়ারি এই ঘটনার জন্য পুরআধিকারিক অর্থাৎ অর্থদফতরের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।