আসানসোল: গাড়ি একটাই, অথচ নম্বর প্লেট দু’টি। যেন একটি দিয়ে সন্তর্পনে আড়াল করা অপরটিকে। ডালাবন্ধ কন্টেনার জাতীয় সড়ক দিয়ে ছুটছে আপন গতিতে। বাইরে থেকে দেখলে কিছুটি বোঝার উপায় নেই। আপাতদৃষ্টি দেখলে ডাক পার্সেল বা ভারী জিনিস বোঝাই গাড়ি বলেই মনে হবে। অথচ এরকমই গাড়িতে চাপিয়ে নিত্যদিন এদেশ থেকে বাংলাদেশ পাচার হয় শ’য়ে শ’য়ে গরু। পুলিশ প্রশাসনও গাড়িগুলি আটকায় না বলে অভিযোগ। তাই এবার নিজেদের উদ্যোগে পাচারের জন্য নিয়ে যাওয়া গরু বোঝাই একটি কন্টেনার আটকে দিল গো রক্ষা কমিটির সদস্যরা।
ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে। মঙ্গলবার ভোররাতে স্থানীয় গোরক্ষা কমিটির সদস্যদের হাতে আটক হয় একটি গরু বোঝাই কন্টেনার। সংস্থার সদস্যদের অভিযোগ, বিহারের ওরঙ্গবাদে হাট থেকে কেনা হয় এই গরুগুলি। গৃহপালনের নামে কি না গরুগুলি পরবর্তীতে পাচার হয়ে যায় প্রতিবেশী বাংলাদেশে। আর এই পাচারের জন্য রুট হিসাবে ব্যবহার করা হয় বিহার ও পশ্চিম বাংলার বীরভূম, মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত যাওয়া জাতীয় সড়ককে।
একাধিকবার পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। তাই মঙ্গলবার ভোরে ধানবাদের বারবাড্ডার কাছে একটি গরু বোঝাই কন্টেনার আটকে দেন গোরক্ষা কমিটির সদস্যরা। বেগতিক বুজে তখনই ঘটনাস্থল ছেড়ে পালায় গাড়িটির চালক ও খালাসী। এরপর ডালা খুলতেই দেখা যায় পার্সেলের আড়ালে গাদাগাদি করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বেশ কয়েকটি গরু। এবং গোটা কন্টেনারটির কোথাও একটি ছোট্ট জানলা পর্যন্ত নেই। গোরক্ষা কমিটির সদস্য বলেন, ‘গাড়িটিকে আটকানোর পর রাতেই আমরা পুলিশকে খবর দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়নি। তাই সারারাত আমরাই গাড়িটিকে আটকে রাখি। তবে পরবর্তীতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বারবাড্ডা থানার পুলিশ।’
শুধু আসানসোল নয়, আজ পাচারের আরও একটি খবর আসে পুরুলিয়া থেকেও। দুধের ট্রাক উল্টে দুধের জায়গায় বের হল গরু। আর অভিনব এই পাচারের সাক্ষী থাকল পুরুলিয়াবাসী। পুরুলিয়া বাঁকুড়া সীমান্তে বিশপুরিয়ার কাছে দুধের একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এবার ট্রাকটিকে উল্টে যেতে দেখে স্বাভাবিকভাবেই ভিড় জমান এলাকাবাসী। তবে ট্রাকটি উল্টে পড়ার পরই খুলে যায় ডালা। তখনই চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। দেখা যায় ভেতরে বেঁধে রাখা অবস্থায় রয়েছে অনেকগুলি গরু। কয়েকটি গরু মারাও যায়।