আসানসোল: তিনি লোকসভার প্রার্থী। সাতটি বিধানসভা এলাকায় ঘুরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে প্রচারে। তবু তার ফাঁকেই ছোট্ট শ্বেতা, কুসুম, বিকাশ, আফতাবদের দেখতে না পেলে তাঁর মন উদাস হয়ে যায়। তাই মঙ্গলবার সকাল সকাল ছুটে গেলে তাদের কাছে। আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী জাহানারা খান প্রচারের মাঝে যতটুকু সময় পাচ্ছেন, ততক্ষণই স্কুলে গিয়ে তাঁর প্রিয় পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করছেন, পড়াচ্ছেন।
পিছিয়ে পড়া পরিবারের শিশু-কিশোরদের শিক্ষার আলোয় নিয়ে আসতে প্রায় ২৫ বছর ধরে স্কুল চালিয়ে আসছেন জামুড়িয়ার সিপিএম প্রার্থী তথা প্রাক্তন বিধায়ক জাহানারা খান। প্রচারের ফাঁকে সময় পেলেই কচিকাঁচাদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন জাহানারা।
সাধারণ শ্রমিক পরিবার থেকে উঠে এসেছেন জাহানারা। তাই তিনি এলাকায় দেখেছেন কত ছাত্র-ছাত্রীকে অভাবের কারণে স্কুল ছেড়ে যেতে হয়। অনেকের তো পড়াশোনার সুযোগই হয় না। তাই ২৫ বছর আগে গ্রামাঞ্চলের শিশু-কিশোরদের শিক্ষার আলোয় নিয়ে আসতে জাহানারা খান শুরু করেছিলেন ‘বালবোধন শিক্ষা নিকেতন।’ জামুড়িয়ার শেষ প্রান্তে দক্ষিণ পরাসিয়া খনি এলাকায় রয়েছে এই হিন্দি মিডিয়াম স্কুলটি। জাহানারা জানান, শিশুদের পড়াশোনার সব দায়িত্ব তাঁর।
ইসিএল-এর কাছে একটি পরিত্যক্ত আবাসনে প্রথম ওই স্কুলটি চালু হয়। যে সব শিশুরা পড়াশোনা ছেড়ে কাজ করতে চলে যায়, তাদেরকে পুনরায় ফিরিয়ে নিয়ে শিক্ষার আলো দেখানোই জাহানারার উদ্দেশ্য। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বহরে বেড়েছে স্কুল। বর্তমানে জাহানারা খানের স্কুলে প্রায় ২৮৭ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় স্কুলে। স্কুলে যারা একসময় পঠন-পাঠন করেছেন, তাঁরাই এখন শিক্ষক-শিক্ষিকা হয়ে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন।
রাজনীতিতে সক্রিয় হলেও শিশুদের কাছে বার বার ছুটে যান জাহানারা। সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত স্কুল হয়। প্রার্থী বলেন, “দলকে আমি বলেছি, সেভাবেই আমাকে কর্মসূচি দিতে যেন একটি বার হলেও আমি স্কুলে যেতে পারি।”