Minakshi Mukherjee: মেয়ে মীনাক্ষীর ব্রিগেড, বাবা মনোজ ব্যাজ-পোস্টার-টিফিন নিয়ে কোলফিল্ড এক্সপ্রেসে

Minakshi Mukherjee: মীনাক্ষীর বাড়ি কুলটির প্রত্যন্ত গ্ৰাম চলবোলপুরে। এখানেই ছোট থেকে বেড়ে ওঠা। এখানেই পড়াশোনা। গ্রামের লোকেরা মীনাক্ষীকে অবশ্য 'পলি' নামেই চেনেন। ছোট থেকে এই নামেই তাঁর এলাকায় পরিচিতি।

Minakshi Mukherjee: মেয়ে মীনাক্ষীর ব্রিগেড, বাবা মনোজ ব্যাজ-পোস্টার-টিফিন নিয়ে কোলফিল্ড এক্সপ্রেসে
কী বলছেন মনোজ মুখোপাধ্যায়? Image Credit source: TV-9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 06, 2024 | 5:43 PM

আসানসোল: সালটা ২০০৮। তখনও বঙ্গে ক্ষমতায় বামেরা। ওই বছরই ডিওয়াইএফআই এর ডাকে শেষবার ভরেছিল ব্রিগেড। উড়েছিল লাল পতাকা। যদিও তখন সবে কুড়ির গণ্ডি পার করেছে কুলটির ‘ডাকাবুকো’ মেয়েটা। কিন্তু, কে জানত এক যুগ পর এই মেয়েই হয়ে উঠবে বামেদের অন্যতম প্রধান মুখ, কমরেডদের ‘ক্যাপ্টেন’! কে জানত তাঁর হাত ধরেই ফের ‘লাল টুকটুকে দিনের স্বপ্ন’ দেখবে বাম ব্রিগেড, তাঁর কাঁধেই আসবে ‘কিছু ছোট ছোট কুঁড়িদের ফোটানোর’ গুরু দায়িত্ব! ১৬ বছর পর ফের ব্রিগেড চলোর ডাক দিয়ে রাজ্যজোড়া ইনসাফ যাত্রা করে ফেলেছে ডিওয়াইএফআই (DYFI)। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিও শেষ। ইতিমধ্যেই কলকাতার দিকে যাত্রা শুরু করে দিয়েছে লাল পতাকার মিছিল। রাত পোহালেই সেই ব্রিগেডই উঠবে ‘ফ্য়াসিবাদ’ বিরোধী মীনাক্ষীর (Minakshi Mukherjee) মেঠো স্লোগান। তিনিই মূল বক্তা। ইতিমধ্যেই তাঁর কাটআউটে ছেয়ে গিয়েছে গোটা রাজ্য। তাঁর হয়ে ব্যাট ধরেছেন খোদ বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনিই সম্ভাবনা, তিনিই ভবিষ্যৎ, জোরালো কণ্ঠে বলছেন বাম নেতারা। লোকসভার আগে এই ব্রিগেডের হাত ধরেই নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নটা যেন আরও বেশি করে দেখছে বামেরা। কিন্তু, রাজনীতির আঙিনার অনেকেই আবার বলছেন, মীনাক্ষীর ‘মেঠো’ ‘গ্রাম্য’ প্রান্তিক উচ্চারণ-আচরণ-ভাবমূর্তিই তাঁকে শহুরে-আধা শহুরে মানুষদের থেকে আলাদা করে দিচ্ছে না তো?

মীনাক্ষীর বাড়ি কুলটির প্রত্যন্ত গ্ৰাম চলবোলপুরে। এখানেই ছোট থেকে বেড়ে ওঠা। এখানেই পড়াশোনা। গ্রামের লোকেরা মীনাক্ষীকে অবশ্য ‘পলি’ নামেই চেনেন। ছোট থেকে এই নামেই তাঁর এলাকায় পরিচিতি। গ্রামের সেই মেয়েই রবিবার আলো করবে ব্রিগেডের মঞ্চ, তাঁর দিকে তাকিয়ে বঙ্গ সিপিএমের নেতারা, এ কথা ভেবে খুশিতে ভাসছেন গ্রামের লোকজনও। মীনাক্ষী আরও বড় নেত্রী হয়ে উঠুক, চাইছেন গ্রামের সকলেই। গ্রামের প্রবীনরা বলছেন, তাঁর হাত ধরেই ন্যায় বিচার পাক রাজ্যের আম-আদমি। নবীনরা বলছেন পলিদি তো এখন তাঁদের অনুপ্রেরণা। 

ক্যাপ্টেন হতে নারাজ মীনাক্ষী

Minakshi Selim

সেলিমের সঙ্গে মীনাক্ষী

তবে তিনি যে ক্যাপ্টেন হতে নারাজ তা টিভি-৯ বাংলার মুখোমুখি হয়ে আগেই বলেছেন মীনাক্ষী। সমর্থন করছেন না তাঁর কাটআউট প্রচারকেও। সাফ বলেছেন, “আমি তো ক্যাপ্টেন নই। আমাদের ক্যাপ্টেন আমাদের গঠনতন্ত্র, আমাদের আদর্শ, আমাদের নীতি।” তবে মীনাক্ষীই যে আগামীতে দলের মূল কান্ডারি তা অকপটেই বলছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। টিভি-৯ বাংলার সাক্ষাৎকারে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “স্বাধীনতার সময়ে একটু ডাকাবুকোদের তো ক্যাপ্টেন বলেই সম্বোধন করত মানুষ। আগে তো ডিওয়াইএফআইয়ের কোনও মহিলা সেক্রেটারি ছিল না। সে কারণেই হয়তো এখন প্রচার বেশি হচ্ছে।” কিন্তু বামেরা কী এইভাবে কাটআউট প্রচার, ব্যক্তিপুজোতে বিশ্বাস করে? এ প্রশ্ন করতেই আবার ইলা মিত্রর প্রসঙ্গ টানতে দেখা গিয়েছে বিমানকে। মনে করিয়ে দিয়েছেন গোলাম কুদ্দুসের ‘স্তালিন নন্দিনী ফুচিকের বোন ইলা মিত্র’ কবিতার কথা। 

মেয়ের কাঁধে ভর করেই দেখছেন দিনবদলের স্বপ্ন 

Minakshi in Campaign

প্রচারে মীনাক্ষী

এদিকে হাতে আর কয়েক ঘণ্টা। তারপরই ব্রিগেড যাত্রা। চলবোলপুর সিপিএম শাখা অফিসে এখন থেকেই সাজ সাজ রব। পাৰ্টি অফিসে বসে কাজ সামাল দিচ্ছেন মিনাক্ষীর বাবা মনোজ মুখোপাধ্যায়। ব্রিগেডের ব্যাজ থেকে পোস্টার নিজেই তৈরি করছেন। কুলটি থেকে কতজন ব্রিগেড যাবেন, কী টিফিন হবে, ট্রেনে যাবেন নাকি বাসে, সব দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। মেয়ের কাঁধে ভর করে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন তিনিও। 

মনোজবাবু জানাচ্ছেন, কোলফিল্ড এক্সপ্রেসে কলকাতা যাবেন তাঁরা। পার্টি কর্মীরা ছাড়াও গ্রামের অনেক মানুষই যাচ্ছেন তাঁদের সঙ্গে। পার্টি কর্মীরাই রাতে টিফিন তৈরি করবেন। যাঁরা ব্রিগেড যেতে পারবেন না তাঁদের চোখ থাকবে। তাঁর মেয়ে আজ বামেদের প্রধান মুখ। কতটা গর্ব হয় তাঁর? উত্তরে মনোজবাবু বলছেন, মূল বক্তা কাউকে না কাউকে হতেই হয়। দল ওকে যে দায়িত্ব দিয়েছে সেটা পালন করছে। কমিউনিস্ট পার্টিতে কেউ মুখ হয় না। মিনাক্ষী অন্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালাচ্ছে। পাৰ্টির দলগত নেতৃত্বের মধ্যে অন্যদের মতো সেও এক সৈনিক।