দুর্গাপুর: আবাসনের পাশেই এক তলা ঘরে মা আর ছেলে থাকতেন। প্রতিবেশীরা ছেলেকেই ঘরের বাইরে দেখতেন বেশিরভাগ। কারণ তিনিই দোকানে যেতেন, বাজারঘাট করতেন। কিন্তু শেষ দু’তিন ধরে তাঁকে ঘরের বাইরে দেখা যাচ্ছিল না। তাঁর মা-ও দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। ফলে কোনও একটা বিপদ আঁচ করেছিলেন প্রতিবেশীরা। সঙ্গে গত পরশু থেকে একটা গন্ধও নাকে আসছিল তাঁদের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গন্ধটা হয়েছে আরও প্রকট। সোমবার সকালে প্রতিবেশীরা ঘরে যেতেই স্তম্ভিত হয়ে যান। বিছানার ওপর পড়ে রয়েছে ছেলের শরীরটা। পচন ধরেছে তাতে। কিন্তু অসুস্থ মা ভাবছেন, তাঁর ছেলে ঘুমোচ্ছে। তাই ডাকছেনও না তাঁকে। ভয়ঙ্কর ঘটনা দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর এ জোনের সেকেন্ডারি এলাকায়। মৃতের নাম সুশীল জানা (৪০)। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দুর্গাপুর থানার পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা প্রাক্তন কাউন্সিলার পল্লবরঞ্জন নাগ। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সুশীল ও তাঁর মা বেলারানি জানা দীর্ঘদিন ধরেই ওই আবাসনের বাসিন্দা। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, দু’জনই অসুস্থ ছিলেন কিছুদিন ধরে। তবে সুশীলকেই তাঁরা রাস্তাঘাটে বের হতে দেখতেন। দুদিন ধরে না বের হতে দেখায় তাঁরা সন্দেহ করেন। সোমবার সকালে ওই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতেই প্রতিবেশীদের সন্দেহ আরও গাঢ় হয়। পরে এই আবাসনে গেলে দেখা যায় বিছানায় সুশীল জানা’র মৃতদেহ পড়ে। তাতে পচন ধরেছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান দু’দিন আগে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের।
ছেলের যে মৃত্যু হয়েছে,তা টেরও পাননি বৃদ্ধা। দুর্গাপুর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “মা-ছেলে দুজনেই অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু এমনটা যে ঘটে যেতে পারে, বুঝতে পারিনি। কাল রাত থেকেই একটা গন্ধ আসছিল নাকে। সকালে সেটা আরও বেশি পাই। এদিকে সুশীলবাবুকেও আমরা বাইরে দেখতে পাচ্ছিলাম না। তাই বাড়িতে যাই। তারপর তো দেখি এই অবস্থা।”