আসানসোল: পঞ্চায়েত ভোটকে পাখির চোখ করেই বাংলায় পা রেখেছেন অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। ২৩ তারিখ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার করছেন তিনি। শেষ দিনে অনুব্রতর গড় বোলপুরে প্রচার করার কথা রয়েছে মিঠুন। আর তাতেই যেন ঘুম উড়েছে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের। এজলাসে বসেই ‘ফাটাকেষ্টর’ সভার পাল্টা দিতে তৈরি কেষ্ট। কেষ্ট আছেন স্বমহিমায়। এদিন এজলাসে অনুব্রতর কর্মী বৈঠক দেখার পর অনেকেই বলতে শুরু করেছেন সে কথা। এদিন এজলাসে বসে ফের কর্মী বৈঠক করলেন বীরভূমের জেলা সভাপতি। বিচারক রায় ঘোষণার পর এজলাস ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেই বীরভূমে ফাটাকেষ্টর সফরের পর পাল্টা বড় কর্মিসভা করার নিদান দিলেন কেষ্ট মণ্ডল।
সূত্রের খবর, বীরভূমের নেতাদের নির্দেশ দিয়ে কেষ্ট মণ্ডল বলেন, “মিঠুন চক্রবর্তীর সভার পাল্টা এত বড় সভা করতে হবে যাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বীরভূমে তৃণমূল ছাড়া আর বিকল্প দল না থাকে।” এদিকে এজলাসে যখন এই সভা চলছে ততক্ষণে পুলিশ কর্মীরা এজলাস ছাড়ার তাড়া দিতে শুরু করেছেন অনুব্রতকে। তবে সেসবে পাত্তা না কার্যত ধমকের সুরে অনুব্রত বলেন, “এত তাড়া কিসের! দেখছেন না আমাদের লোকদের সঙ্গে কথা বলছি।” এরপরও আরও আধ ঘণ্টা সদলবলে এজলাসেই ছিলেন অনুব্রত। চলল ফাটাকেষ্টকে মাত করার ঘুঁটি সাজানোর মাস্টার প্ল্যান। পরে অবশ্য কথোপকথন সেরে চা খেয়ে তিনি এজলাস ছাড়েন।
গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রতকে শুক্রবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করানো হয়। গত ১১ নভেম্বর তাঁকে এই আদালতে আনা হয়েছিল সেখানে জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তারপরে শুক্রবার ফের আদালতে আনা হয়। যদিও এদিন অনুব্রতর আইনজীবী তাঁর জামিনের আবেদন করেননি। ফলে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয় ৯ ডিসেম্বর। আগামী শুনানির আগে আরও ১৪ দিন জেল হেফাজতে থাকতে হবে কেষ্টকে। অন্যান্য দিনের মতো এদিনও আসানসোল সিবিআই আদালতে ও এজলাসে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন বীরভূম সহ অন্য জায়গার তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। পঞ্চায়েত ভোটের রণকৌশল নিয়ে তাঁদের কিছু নির্দেশও দিতে দেখা গেল অনুব্রতকে। শুনানি শেষ হতেই এজলাস ছেড়ে বেরিয়ে যান বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। তখনও এজলাসের বেঞ্চে বসেছিলেন অনুব্রত। সেই সময়েই বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়-সহ বেশ কয়েক জন তৃণমূলের নেতা-কর্মী অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করেন। বীরভূম তৃণমূল জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “জেলায় দলের সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন কেষ্টদা। কিছু পরামর্শও দিয়েছেন। আমাদের মুখ থেকে আগামী ২৭ নভেম্বর মিঠুনের বীরভূম-সফরের কথা শুনে কেষ্টদা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পাল্টা বিরাট সভা করতে হবে বীরভূমে।”