পশ্চিম বর্ধমান: গত ৯ জুন গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সেহেগল হোসেন। শুক্রবার তাঁকে আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়। সিবিআই সূত্রে খবর, এই সেহেগল সামান্য কনস্টেবল হয়েও প্রায় ১০০ কোটি টাকার মালিক। ঝাঁ চকচকে পেল্লাই বাড়ি থেকে চোখ ধাঁধানো গাড়ি, পেট্রোল পাম্প থেকে তাল তাল সোনা, কী নেই তাঁর নামে। সূত্রের দাবি, তাঁকে জেরা করে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু তথ্য ইতিমধ্যেই হাতে এসেছে তদন্তকারীদের। এর আগে সাতদিন সিবিআই হেফাজতে ছিলেন সেহেগল। শুক্রবার ফের তাঁর সাতদিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেয় সিবিআই কোর্ট। আগামী ২৪ জুন ফের এই মামলার শুনানি হবে।
সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর এজলাসে সেহেগল হোসেনের মামলার শুনানি ছিল। সিবিআইয়ের তরফে সেহেগলকে আরও সাতদিন হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানানো হয়। যদিও পাল্টা সেহেগলের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা সওয়াল করেন, এই সাতদিনে জেরাপর্বে এমন কোনও তথ্যই তাঁর মক্কেলের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি, যে কারণে ফের সাতদিন সিবিআইকে হেফাজতে নিতে হবে। বরং সেহেগলের জামিনের জন্য আবেদন জানান তিনি। দীর্ঘ এই সওয়াল-জবাব পর্ব চলে। এরপরই বিচারক সেহেগলকে সিবিআই হেফাজতে থাকার নির্দেশ দেন।
সিবিআইয়ের তরফে আইনজীবী রাকেশ কুমার এদিন সওয়াল করে বলেন, সায়গলের কাছে গরু পাচার মামলার অনেক তথ্য রয়েছে। সিবিআই তাঁকে গ্রেফতারের আগে একাধিকবার কলকাতায় নিজাম প্যালেসে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। সেখানেই সেহেগলের বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকায় গ্রেফতার করা হয়। দাবি করা হয়, সেহেগলের বিপুল পরিমাণ আয় বহির্ভূত সম্পত্তির খোঁজও মিলেছে। সিবিআই সূত্রের খবর, তালিকায় রয়েছে, কলকাতার নিউটাউন-সহ একাধিক জায়গায় একাধিক ফ্ল্যাট ও বাড়ি। বীরভূমে পেট্রোল পাম্প, নগদ টাকা, সোনা ও গাড়ি।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সেহেগল ও তাঁর একাধিক ঘনিষ্ঠের নামে নিউটাউন, রাজারহাট, লেকটাউন, বোলপুর এলাকায় ৬টির বেশি ফ্ল্যাট বা জমির ডিড মিলেছে। এমনকী দেওচা পাচামিতে একাধিক ক্র্যাশার মেশিন ও ডাম্পার, নগদ ২ কোটি টাকা মিলিয়ে মোট ১০০ কোটির মত সম্পত্তির হদিশ মিলেছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। যদিও সিবিআইয়ের তরফে আদালতে যে সিজার লিস্ট দেওয়া হয়েছে, তাতে এসবের উল্লেখ নেই। দস্তাবেজ হিসাবে তুলে ধরা হয় বলে সূত্রের খবর।
সিবিআইয়ের তরফে এই সমস্ত দস্তাবেজ ভেরিফিকেশন বা যাচাইয়ের জন্যই ফের সেহেগলকে হেফাজতে নিতে চাওয়া বলে জানা গিয়েছে। একইসঙ্গে সেহেগলের তদন্ত সহযোগিতা না করার বিষয়ও এদিন আদালতে উত্থাপিত হয় বলে সূত্রের দাবি। যে কোনও প্রশ্নে সেহেগল নীরব থাকছেন বলেই সিবিআইয়ের দাবি। সেহেগলের আইনজীবী পাল্টা বলেন, এদিনের সিজার লিস্টে একটি বাড়ির ইলেকট্রিক বিল ছাড়া কিছুই দেখায়নি সিবিআই।