পশ্চিম বর্ধমান: চিনা মাঞ্জার সুতোয় আহত বাজপাখি। ৪০ ফুট উঁচু গাছের ডালে চার ঘণ্টা ধরে ঝুলে থাকল বেচারা। পরে তাকে উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার আসানসোল আদালত চত্বরে এই ঘটনা ঘটে। প্রথমে এ দৃশ্য কয়েকজন আইনজীবীর নজরে আসে। আদালত চত্বরের বিশাল বটগাছের ডালে ঝুলে ছিল একটি পাখি। আইনজীবীরাই আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন। পুলিশ এসে দমকল ও বিদ্যুৎ বিভাগকে জানায়। এরপরই শুরু হয় অভিযান। প্রথমে দমকলের কর্মীরা বিশাল সিঁড়ি লাগিয়ে গাছে ওঠার চেষ্টা করেন। কিন্তু অত উঁচুতে হাত পৌঁছয়নি তাঁদের। এরপর বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে আসা কালিদাস সোরেন নামে এক যুবক ওই পাখিটিকে বাঁচাতে নিজের জীবনের ঝুঁকি নেন। কালিদাস সোরেন বলেন, “বাড়ি যাচ্ছিলাম। আমাকে একজন বলল একটা পাখি আটকে আছে পারব কি না নামাতে। আমি গাছে উঠে পাখিটাকে নামিয়ে আনি। একটা সুতোর মধ্যে আটকে পড়েছিল ও, ঝুলছিল। চার ঘণ্টা ধরে ঝুলেছিল সবাই বলছে। ”
ওই উঁচু গাছে উঠে পাতলা একটি ডালের মধ্যে আটকে থাকা পাখিটিকে উদ্ধারের জন্য হাত বাড়ান। কিন্তু এরপরই দেখা যায় চিনা মাঞ্জা সুতোতে আটকে রয়েছে সে। কোনওক্রমে ওই বাজপাখিকে উদ্ধার করে নামানো হয়। এরপর সকলের শুশ্রুষায় স্বাভাবিক হয়। আসানসোল আদালতের আইনজীবী সৌভিক পাল জানান, ওই যুবক যেভাবে ঝুঁকি নিয়ে পাখিটিকে উদ্ধার করলেন প্রশংসনীয়। তিনি জানান, ডাক্তারকে সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই বাকি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মূলত নাইলনের সুতোর উপর ধাতু ও কাঁচের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি করা হয় এই চিনা মাঞ্জা। এর মধ্যে সিন্থেটিক আঠাও ব্যবহার করা হয়। ফলে ব্লেডের মতো ধারাল হয়ে ওঠে এই মাঞ্জা। মুহূর্তে প্রাণ পর্যন্ত চলে যেতে পারে। এই চিনা মাঞ্জায় পাখিরও প্রাণের বিপদ হয় নিয়মিত। যেহেতু কাঁচের গুঁড়োর সঙ্গে সিন্থেটিক আঠা, ধাতুও মেশানো থাকে, ফলে জল লাগলেও তা পচে না। জাতীয় পরিবেশ আদালত ইতিমধ্যেই এই চিনা মাঞ্জাকে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক বলে ঘোষণা করেছে। দেশে এই চিনা মাঞ্জার বিক্রিও আইন বহির্ভূত। তারপরও এই মাঞ্জা সুতো বিক্রি হয় বাজারে।