আসানসোল: কয়লাকাণ্ডের (Coal Scam) শুনানি। সেই শুনানি চলাকালীন বিরক্ত বিচারকের প্রশ্ন, ‘আসল লোক কোথায়? তিনি তো বাইরেই’। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর ৮৭ দিন ধরে বিচারাধীন বন্দি হয়ে রয়েছেন রত্নেশ ভার্মা। এই রত্নেশ কয়লা পাচারকাণ্ডের অন্যতম মাথা হিসাবে সিবিআইয়ের খাতায় অভিযুক্ত লালার ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিত। লালাকে যেদিন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত সংক্রান্ত আইনি নোটিস পাঠানো হয়, রত্নেশকেও একই দিনে নোটিস দেয় সিবিআই। তবে এখনও অবধি নিজাম প্যালেসে হাজিরাটুকুই দিয়েছেন। অন্যদিকে রত্নেশ আত্মসমর্পণ করেছেন তদন্তকারীদের কাছে। এরপর থেকে তদন্তকারীদের হেফাজতে তিনি।
সিবিআইয়ের নতুন অভিযোগ, জেলে বসে কমপক্ষে ৫ জন সাক্ষীকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন রত্নেশ। এরপরই বিচারক কারও নাম না করে সিবিআইয়ের কাছে জানতে চান, ‘আসল লোক কোথায়? তিনি তো বাইরেই। তাঁর কী খবর?’ সিবিআইয়ের দাবি, আসানসোল জেলে বসে সাক্ষীদের ভয় দেখাচ্ছেন লালার ডানহাত হিসাবে পরিচিত রত্নেশ ভার্মা। এ নিয়ে কয়লাকাণ্ডের তদন্তে একাধিক সাক্ষীর লিখিত বয়ানও আদালতের সামনে তুলে ধরে সিবিআই।
সিবিআইয়ের আরও দাবি, কয়লা পাচারের অ্যাকাউন্ট দেখভালের দায়িত্বে থাকা রত্নেশের সঙ্গে আরও নতুন কিছু প্রভাবশালী অফিসারের যোগসাজশ সামনে এসেছে। সেই সংক্রান্ত নথিও বিচারকের সামনে তুলে ধরেন তদন্তকারী অফিসার উমেশ সিং। রত্নেশের জামিনের আবেদনের বিরোধিতায় একের পর এক তথ্য তুলে ধরেন সিবিআই আইনজীবী রাকেশ কুমার। তবে সব নথি দেখে সিবিআই বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর পর্যবেক্ষণ, ‘সবই তো উনি করছেন একজনের হয়ে। নথিতেও দেখা যাচ্ছে। আসল লোক কোথায়, তিনি তো বাইরেই। তাঁর কী খবর?’
সিবিআই জানায়, সুপ্রিম কোর্টে ১৮ জুলাই ‘তাঁর’ মামলা রয়েছে। তখন ক্ষুব্ধ বিচারক বলেন, ‘যার জন্য এই কাজ অভিযুক্ত করছেন তিনি বাইরে থাকবেন আরেকজনকে আমরা এতদিন জেলে রাখব? আপনারা সুপ্রিম কোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য দিচ্ছেন তো?‘ সিবিআই বলে, ‘সবই জানানো হচ্ছে।’ ৮ মে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। অভিযুক্তর আইনজীবী প্রীতম রায় বলেন, “কী নতুন তথ্য সিবিআইয়ের হাতে এসেছে বা কাদের প্রভাবিত করা হয়েছে তা আমাদের জানানো হয়নি। দু’বছর পলাতক থাকা ও নতুন তথ্য আসার যুক্তিতেই জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে।”