আসানসোল: ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। এখনও খোঁজ নেই বিজেপি কর্মী রাজেন্দ্র সাউয়ের হত্যায় যুক্ত দুষ্কৃতীদের। খুনের মোটিভ নিয়েও ধন্দে রয়েছে পুলিশ। যে স্করপিও গাড়ির মধ্যে গুলিবিদ্ধ দেহটি পাওয়া গিয়েছে, সেই স্করপিও গাড়িটি পশ্চিম মেদিনীপুরের এক ব্যক্তির বলে জানা গিয়েছে। ওই গাড়িটি বন্ধক ছিল রাজেন্দ্রের কাছে। পাশাপাশি রাজেন্দ্র সাউয়ের মোবাইল ফোনটিও ঘটনাস্থলের অদূরে ঝোপের মধ্যে পাওয়া গিয়েছে। ফোনটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারে লোকজনের দাবি রাজেন্দ্র পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়ে বেরিয়েছিলেন বাড়ি থেকে। সেই টাকার খোঁজ পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে রবিবার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে যান অগ্নিমিত্রা পাল। রাজেন্দ্রর স্ত্রী বারবারই অচৈতন্য হয়ে পড়ছেন। তিনটি শিশু সন্তান রয়েছে তাঁর। পরিবারে আর কেউ রোজগেরে নেই। তাই তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন বিধায়ক।
যদিও পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, রাজেন্দ্র সাউ একদিকে যেমন বিজেপি কর্মী ছিলেন, পাশাপাশি তিনি একজন ব্যবসায়ীও ছিলেন। তার জমির ব্যবসা ছিল এবং তিনি রেশন ডিলার ছিলেন। তাই ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে খুন হতে পারে বলে প্রাথমিক অনুমান। কিন্তু অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, “পুলিশ সবসময় নিজের দায় এড়িয়ে যেতে চায়। তাই পুলিশের ওপর ভরসা নেই।” রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে বলে তোপ দাগেন তিনি। প্রতিবাদের সরব হয়ে বিজেপি বিধায়ক বলেন, রাজ্যের পুলিশের ওপর বিশ্বাস ও ভরসা নেই। তাই এই ঘটনায় তিনি সিবিআই তদন্তের দাবি তোলেন।
এমনকি ৮ তারিখ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আসানসোল যাচ্ছেন। ৯ তারিখ তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। আসানসোলের ব্যবসায়ী অরবিন্দ ভাগত নিজের হোটেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন, সেটা ফেব্রুয়ারি মাসের ঘটনা। বারাবনি দুই মন্ডল সভাপতির রহস্যজনক ভাবে লরির চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে কয়েকদিন আগে। রাজু ঝা খুন হয়েছেন শক্তিগড়ে। তিনিও ব্যবসায়ী ছিলেন, পাশাপাশি বিজেপি নেতা।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে একের পর এক বিজেপি কর্মীদের খুন করে দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত গ্রেফতার না হলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাবেন বলে হুঁশিয়ারিও দেন। ইতিমধ্যেই শনিবারে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিলেন অগ্নিমিত্রা পাল। রবিবার বিজেপি কর্মীরা রানিগঞ্জের মোড়ে অবরোধ করেছিলেন।
অগ্নিমিত্রা চলে যাওয়ার পর মৃতের বাড়িতে দেখা যান প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর, তৃণমূল জেলা সহসভাপতি কাঞ্চন তেওয়ারিকে। তিনি বলেন, “মৃত রাজেন্দ্র বাবা নন্দজি সাউ তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের একনিষ্ঠ কর্মী। রাজেন্দ্র আগে তৃণমূল করতেন। এখন অন্য দলে চলে গিয়েছেন।” এই পরিবারের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি কান্নাভেজা চোখে বলেন, “যেই তদন্ত করুক যেন প্রকৃত সত্য উঠে আসে এবং এই খুনের ঘটনায় যেন কেউ রাজনৈতিকভাবে রুটি শেকার চেষ্টা না করে।”