পশ্চিম বর্ধমান (আসানসোল): শুক্রবার পথ দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক পরিণতি দম্পতির। মনসা পুজোর প্রসাদ খেয়ে বাড়ি ফিরছিলেন বাইকে। পিছন থেকে একটি ডাম্পার এসে তাঁদের পিষে দেয় বলে অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই মহিলা। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁর স্বামীকেও মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আসানসোলের জামুরিয়ায় তুমুল ঝামেলা শুরু হয় এদিন। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিক্ষোভ দেখান এলাকার লোকজন।
জামুড়িয়ার শিল্পতালুকে মণ্ডলপুরে একটি বেসরকারি কারখানার গেটের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, ওই কারখানারই ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যু হয় আস্তিক রুইদাস (৩৫) ও তাঁর স্ত্রী ললিতা রুইদাসের (৩১)। তাঁরা জামুড়িয়া থানার নন্ডি রুইদাস পাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। বৃহস্পতিবার অন্ডালের হরিপুরে মনসা পুজো উপলক্ষে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান। এদিন সেখান থেকেই ফিরছিলেন। মণ্ডলপুরে ওই কারখানার সামনে হঠাৎই একটি ডাম্পার তাঁদের বাইকে ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ।
অভিযোগ, মালবোঝাই ওই ডাম্পার এতটাই গতিতে ছিল যে চালক গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। ডাম্পারের ধাক্কায় বাইক থেকে ছিটকে পড়েন আস্তিক ও ললিতা। ললিতা সেখানেই মারা যান। আস্তিকের প্রাণটা তখনও ছিল। রক্তাক্ত অবস্থাতেও চোখ ঘুরিয়ে খুঁজছিলেন স্ত্রীকেই। এলাকার লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে ললিতাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। আস্তিক রুইদাসকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। পরে তিনিও মারা যান। এদিকে ততক্ষণে পরিবার দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন। কারখানা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জেরে এই দুর্ঘটনা বলে অভিযোগ তুলে কারখানার গেটের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে জামুড়িয়া থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, “এখানে বারবার বলা হয়েছে নিরাপত্তার দিকটা দেখতে। দু’জন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন। তাঁরা যে কী করেন, সেটা তাঁরাই জানেন। দুর্ঘটনা তো এখানে লেগেই আছে। মানুষের প্রাণের দামই নেই এদের কাছে। আজ একটা এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটল বলে হইহই। কিন্তু প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগে রয়েছে এখানে। দু’মাস আগে আমাদের হিজলগোড়া গ্রামেরও একজন মারা গিয়েছিলেন। রোজকার ব্যাপার হয়ে যাচ্ছে এই দুর্ঘটনা। প্রশাসনের কাছে আমাদের একটাই অনুরোধ এখানকার সমস্যার সমাধান করুন। না হলে এভাবে মানুষ মরতেই থাকবে।”