আসানসোল: ৪১টি পরিবারের প্রার্থনা কি বিফলে যাবে? যে কোনও উপায়ে তাঁদের বের করে আনতে বদ্ধপরিকর প্রশাসন। বিশেষ টিম, বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির মতামত, আধুনিক যন্ত্র, অদম্য চেষ্টা, সব যখন কার্যত বিফলে যেতে বসেছে, তখন আশা জাগিয়েছে এক অন্য পদ্ধতি- ‘র্যাটহোল মাইনিং’। অনেকেই বলছেন, ‘র্যাটহোল মাইনার’রা সেই বিশেষ পদ্ধতিতে খননকার্য চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা আসলে ‘র্যাটহোল মাইনার’ নন, এমনই জানাল ইস্টার্ন কোলফিল্ড বা ECL। ইসিএল কর্তা জানিয়েছেন, অবৈধ কয়লাখনিতে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদেরই ‘র্যাটহোল মাইনার’ বলা হয়।
‘অর্গার মেশিন’ দিয়েই প্রথমে খননকাজ শুরু হয়েছিল উত্তরকাশীর অভিশপ্ত সুড়ঙ্গে। পরে সেই মেশিন খারাপ হয়ে যাওয়ায় ম্যানুয়াল অপারেশনে ভরসা করে উদ্ধারকাজ শুরু হয় সেখানে। ইসিএল-এর টেকনিক্যাল ডিরেক্টর নীলাদ্রি রায় জানিয়েছেন, যাঁদের উত্তরকাশীতে উদ্ধারকাজের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকে আসলে খনি শ্রমিক।
ইসিএল কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, র্যাটহোল মাইনার শব্দটির সঙ্গে পরিচিত আসানসোল-রানিগঞ্জ কয়লা খনি-অঞ্চল। এই মাইনাররা সাধারণ কাজ করেন অবৈধ কয়লা খনিতে। ইসিএল-এর খনিতে কয়লা খননে র্যাটহোল পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় না। যাঁরা কয়লা চুরি করেন, তাঁরাই এই পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন। এই পদ্ধতিতে প্রথমে মাটির মধ্য়ে কুয়োর মতো একটি গর্ত তৈরি করা হয়। সে গর্ত দিয়ে অন্তত ২০-৩০ ফুট নীচে নেমে তারপর আড়াআড়ি ভাবে বা সমান্তরাল ভাবে মাটির নীচে ছোট্ট সুড়ঙ্গ তৈরি করতে হয়। এইভাবে যাঁরা সুড়ঙ্গ তৈরি করেন তাঁদেরই বলা হয় র্যাটহোল মাইনার বা মালকাটার। সুড়ঙ্গের মধ্যে শুয়ে শুয়ে বা বসেই তাঁরা গর্ত করতে পারেন।
ইসিএল-এর কয়লা খননের ক্ষেত্রে কয়লাস্তরের নাগাল পাওয়ার আগে পর্যন্ত কখনও কখনও এই ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার হয়। যেখানে ভারী মেশিন চালালে ধস নামতে পারে সেখানে ছোট ড্রিল মেশিন দিয়ে প্রথমে সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয় ও ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করে কয়লাস্তর পর্যন্ত পৌঁছনো যায়। ইসিএল কর্তৃপক্ষ মনে করছে, এই পদ্ধতিতে সফল হবেন উত্তরকাশীর উদ্ধারকারীরা। আটকে পড়া ওই ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধার করা সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছেন তিনি।