ঘাটাল: উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবস্থা দেখেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন বিজেপি বিধায়ক। তীব্র তাপপ্রবাহে নাজেহাল অবস্থা হয়ে উঠেছিল ঘাটালের বীরসিংহ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের রোগীদের। বিকেল হলেই স্যালাইন খুলে বাইরে চলে আসতে হচ্ছিল তাঁদের। এই খবর সামনে আসতেই সেই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শনে যান ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট। হাসপাতাল পরিদর্শনের পর তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। তৃণমূল পরিচালিত ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান বিজেপি বিধায়ক।
বিধায়ক বলেন, ‘সরকারের টাকা আত্মসাৎ করে নিজে দোতলা বাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন, দু’তিনটে এসি লাগিয়ে নিয়েছেন অথচ এই হাসপাতালের পরিকাঠামোয় নজর নেই তাঁদের।’ সরকার পক্ষ না করলে নিজের বিধায়ক তহবিলের টাকায় কাজ করবেন বলেও জানিয়েছেন শীতল কপাট।
তীব্র তাপপ্রবাহে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি রোগীদের নাজেহাল অবস্থা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে আগেই। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা থেকে রেহায় পেতে রোগীরা হাত থেকে স্যালাইন খুলে বাইরে গাছের তলায় আশ্রয় নিচ্ছিলেন। রোগীদের অভিযোগ ছিল, হাসপাতালের ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত ফ্যানের অভাব রয়েছে, তাই তীব্র তাপপ্রবাহে ওয়ার্ডের ভিতর টিকে থাকাই দায় হয়ে উঠছিল!রোগীরা আরও অসুস্থও হয়ে পড়ছিলেন।
উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিকাঠামো সম্পর্কে বিধায়ক জানতে চান বিএমওএইচ ডঃ প্রসূন জানার কাছে। গরমে নাজেহাল হয়ে কীভাবে হাসপাতালের ভিতরে থাকতে হচ্ছে, সে সম্পর্কে বিধায়কের কাছে অভিযোগ জানান রোগী ও তাঁর পরিজনেরা। হাসপাতালের বিএমওএইচ ডঃ প্রসূন জানা বিধায়কের কাছে সমস্যার কথা স্বীকার করে নেন। তিনি বিধায়ককে জানান, হাসপাতালের ছাদে একটি শেড তৈরির জন্য লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও উদ্যেগ নেওয়া হয়নি।
বিএমওএইচ-এর দাবি, পর্যাপ্ত ফ্যান রয়েছে, ওয়ার্ড ঠান্ডা করার ব্যবস্থা থাকলেও সূর্যের প্রখর তাপে ছাদ অত্যাধিক গরম হয়ে যাওয়ায়, তা সম্ভব হচ্ছে না। একবছর আগে শেড তৈরির জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে কিন্তু কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি বলেই অভিযোগ।
ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তথা ঘাটাল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দিলীপ মাজির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন বিজেপি বিধায়ক। তিনি বলেন, হাসপাতালে পরিকাঠামো উন্নয়নে নজর নেই তাদের। এনিয়ে বিধানসভায় সরব হবেন বলেও তিনি জানান।
বিজেপি বিধায়কের তোলা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি দিলীপ মাজি। তিনি বলেন, ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে যখন যা চাওয়া হয়েছে তাই দেওয়া হয়েছে। ১০০ শতাংশ না পারলেও ৯০ শতাংশ দেওয়া হয়েছে। বিধায়কের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার বাড়িতে কোনও এসি নেই। এমনকী পঞ্চায়েত সমিতি কার্যালয়ে আমার ঘরেও কোনও এসি নেই। আর আমার বাড়ি আমার বাবা অনেক দিন আগেই তৈরি করে গিয়েছিলেন। তাতে জমি জায়গা বিক্রি করতে হয়েছিল এবং দেনাও হয়েছিল।’