খড়্গপুর: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মুহূর্তের তাঁর বাড়ির দিকে খেয়াল দেওয়া উচিত। কয়লা পাচার কাণ্ডে তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে সিবিআই হানার ‘উপদেশ’ বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের। বর্তমানে খড়্গপুরে রয়েছেন তিনি। সেখানে সকালে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে চা চক্রে যোগ দেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নে উঠে আসে ‘অভিষেকের বাড়িতে সিবিআই’প্রসঙ্গ। অভিষেক এখন ত্রিপুরায় ব্যস্ত, অথচ তাঁর স্ত্রী একা পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়েছে। অভিষেকের অনুপস্থিতিতেই তাঁর স্ত্রীকে জেরা করছে সিবিআই। তাই এহেন পরিস্থিতিতে দিলীপ ঘোষের পরামর্শ, “আপনি বাড়িটা দেখুন, ত্রিপুরা আমরা দেখে নিচ্ছি।”
রুজিরাকে জেরা সিবিআই-এর
zcxকয়লাপাচার-কাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। আচমকাই বেলায় শান্তিনিকেতনে পৌঁছন গোয়েন্দারা। দলে ছিলেন মহিলা গোয়েন্দাও। সে সময় প্রচারে ত্রিপুরা গিয়েছিলেন অভিষেক। কয়লা পাচার কাণ্ডে এর আগে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে রুজিরাকে দিল্লি ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু দিল্লি হাজিরা এড়িয়ে যান রুজিরা। তারপর তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়। যদিও এই প্রথম নয়, এর আগেও রুজিরাকে বাড়ি গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই।
ত্রিপুরায় অভিষেক
আগামী ২৩ জুনকে সামনে রেখে ত্রিপুরায় ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত অভিষেক। ২৩ জুন ত্রিপুরায় চার কেন্দ্রের উপ নির্বাচন। এদিকে, যখন তাঁর শান্তিনিকেতনের বাড়িতে সিবিআই আধিকারিকরা, তখন ত্রিপুরায় রোড শো করছিলেন অভিষেক। মঙ্গলবারের দৃশ্যটা এমন ছিল, ঘটনাচক্রে, অভিষেক যখন আগরতলায় মোদী সরকারকে বিঁধছেন, ঠিক তখনই কালীঘাটে তাঁর ‘শান্তিনিকেতন’-এ স্ত্রী রুজিরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। এই বিষয়টিকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে কটাক্ষ করেছেন অভিষেক। তিনি বলেন, “এত ভয়, ত্রিপুরা আসব শুনেই রুজিরাকে জেরা!” দিলীপ ঘোষ এদিন সে প্রশ্নেরই উত্তর দেন। তাঁর বক্তব্য, “আপনি নিজের বাড়ি দেখুন, আমরা ত্রিপুরা দেখে নিচ্ছি।” তাঁর কটাক্ষ. “ত্রিপুরায় যাচ্ছেন কেন? কী লাভ? ত্রিপুরায় এত পয়সা খরচা করে এত প্রচার করে যে, একটা সিট জিতে ছিল সেটাও চলে গেছে। আপনি ত্রিপুরা ছেড়ে দিন, আমরা দেখছি, আপনি নিজের বাড়ি দেখুন।”
‘সিবিআই-কেও কড়কানো উচিত’
সিবিআই প্রসঙ্গ উত্থাপিত হতে এসএসসি দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের অনাস্থার বিষয়টিও দিলীপ ঘোষের কাছে রাখেন সাংবাদিকরা। এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “ওঁর হাতে সেই অধিকার আছে, ওঁ সিবিআই-কেও ডেকে ধমক দিতে পারেন। সেটা করেন, যাতে সিবিআই ঠিক কাজ করে।” প্রসঙ্গত, এসএসসি দুর্নীতির একাধিক মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু মঙ্গলবারে একটি মামলার শুনানিতে বিচারপতিকে অত্যন্ত হতাশ হতে দেখা যায়। তিনি মন্তব্য করেন, “সিবিআই কিছুই করে উঠতে পারেনি। কোনও আশার আলো দেখছি না। এর থেকে ইডি ভাল তদন্ত করতে পারত।” বিচারপতির এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সে প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “কেবল ওঁ নয় সারা বাংলার মানুষ সিবিআই এর উপর ভরসা করে। সিবিআই ঠিকমত কাজ করছে কিনা সেটা দেখার দায়িত্ব আছে। সিবিআই-কেও ডেকে কড়কানো দরকার, যাতে ঠিক সময়ে কাজ হয়। না হলে মানুষের মনের মধ্যে যে হতাশা বাড়ছে।” এ প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “পশ্চিম বাংলার রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি আছে, হিংসা ছেয়ে গেছে তার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য লোক কোর্টে যাচ্ছে। আর সিবিআই-এর ওপর ভরসা করছে। সেটা যাতে ঠিকঠাক হয় সেটাও দেখার কথা । আদালত যেমন দুষ্কৃতীদের ধমকাচ্ছে, তেমন সিবিআই যদি কাজ না করে তাকেও ধমকানো দরকার আছে।”