গড়বেতা: বয়স খুব বেশি নয়। কলেজে পড়ে। কিন্তু ভালবাসে খবর। রয়েছে অদম্য ইচ্ছা আর জেদ। তার থেকেই হাতে লিখে খবরের কাগজ বের করছে প্রত্যন্ত গ্রামের এক কলেজ পড়ুয়া। প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকায় থাকে দ্বিতীয় বর্ষের এই কলেজ ছাত্র আবদুল্লাহ খান। ছোট থেকেই ছবি আঁকার প্রতি ভালবাসা তাঁর। পাশাপাশি করেছেন একাধিক কোর্সও। তবে পড়ার অবসরে প্রতিমাসে যা করেন এই যুবক, জানলে অবাক হবেন। নিজের শিল্পসত্ত্বাকে কাজে লাগিয়ে প্রায় দু বছর ধরে প্রতিমাসে তিনি প্রকাশ করেন হাতে লেখা খবরের কাগজ। যেখানে কোনও রাজনৈতিক কচকচানি নয়, থাকে নানা সচেতনতামূলক এবং অনুপ্রেরণামূলক আর্টিকেল। প্রাথমিকভাবে তিনি এই সংবাদপত্র লিখে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন। তাঁর ইচ্ছে হাতে লেখা এই সংবাদপত্রকে পৌঁছে দিতে চান জাতীয় স্তরে।
যাঁরা সাংবাদিকতা ডিগ্রি কোর্স করেছেন বা সাংবাদিকতা পড়েছেন তাঁরা জানবেন জেমস অগাস্টাস হিকির কথা। সর্বপ্রথম মদ্রিত সংবাদপত্র তিনি প্রকাশ করেন। আবদুল্লাহকে দেখেও কারোও-কারও মনে পড়ে যাচ্ছে সেই কথা। ছোট থেকেই বিভিন্ন শিল্পকর্ম ছবি আঁকার প্রতি ভালবাসা দ্বিতীয় বর্ষের এই কলেজ ছাত্রের। সেই মতো বাংলাদেশি এক হাতে লেখা খবর কাগজ দেখে তিনি শুরু করেন বাংলায় হাতে লেখা খবরের কাগজ। বেশ কয়েকদিন ধরে নানান খবর সংগ্রহ করে। প্রতি মাসে প্রায় দু’দিনের প্রচেষ্টায় তিনি প্রকাশ করেন হাতে লেখা সংবাদপত্র। নাম রেখেছেন ‘অধিকার পত্রিকা’। এই পত্রিকায় বিভিন্ন খবর হাতে যেমন লেখেন, তেমনই খবরের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন ছবিও তিনি রং তুলি দিয়ে আঁকেন। এরপর প্রতি ইংরেজি মাসের ৩ তারিখ তিনি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেন এই খবরের কাগজ। আর্ট পেপারের উপর রং, তুলি, পেন দিয়ে নানা খবর ফুটিয়ে তোলেন তিনি।
আবদুল্লাহ খানের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা ৩ নং ব্লকের দাঁড়কা এলাকায়। ছোট থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি শিল্পচর্চা করে সে। আবদুল্লাহ চন্দ্রকোনা রোডের গৌরব গুইন মেমোরিয়াল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। প্রতিমাসে নিয়ম করে তিনি তা প্রকাশ করেন।
নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে আবদুল্লাহ। বাবার ছোট ব্যবসা রয়েছে, মা গৃহবধূ। পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতি মাসে চলে তার এই কাজ। তবে প্রতিমাসে তার এই খবরের কাগজের জন্য অপেক্ষায় থাকেন অনেকেই। প্রতিভাবান এই ছাত্রের মতে, তার খবরের কাগজ মানুষের মধ্যে সচেতনতার বার্তা দেবে, ছড়িয়ে দেবে অনুপ্রেরণামূলক নানা কাহিনী। আগামীতে জাতীয় স্তরে এই খবরের কাগজকে উন্নীত করতে চায় সে।
আবদুল্লাহ বলেছেন, “সবাই মোবাইলে খবর পড়তে অভ্যস্থ। তবে আমার সংবাদ পত্র মনে করায় পুরনো দিনকে। তবে আমার লেখা সংবাদপত্র হাতে লেখা। এই ভাবেও খবর লেখা সম্ভব।”