পশ্চিম মেদিনীপুর: লালগড়ে অজানা পশুর পায়ের ছাপ ঘিরে বাঘের আতঙ্ক। জলাশয়ের ধারে দেখা মিলছে একাধিক পায়ের ছাপ। আতঙ্ক ছড়িয়েছে লালগড়, শালবনি সংলগ্ন এলাকাগুলিতে। জঙ্গলে ঢুকতে চাইছেন না গ্রামবাসীরা। গোয়ালেই বেঁধে রেখেছেন পোষ্যদের। ইতিমধ্যেই এক ছাগলের দেহ উদ্ধার হয়েছে। তাতে আতঙ্ক বেড়েছে বহু গুণ। গোটা বিষয়টির ওপর নজর রেখেছ বন দফতর। পায়ের ছাপের ছবি ও ছাগলের দেহ পাঠানো হয়েছে বিশেষজ্ঞদের কাছে। তাঁরা পরীক্ষা করে দেখছেন গোটা বিষয়টি।
বেশ কয়েকদিন ধরেই লালগড়ের এক অজানা পশুর আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে গ্রামবাসীদের। নদীর ধারে পায়ের ছাপ দেখে আতঙ্ক ছড়ায়। তবে পায়ের ছাপটি কোন পশুর, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। মনে করছেন নদীতে জল খেতে এসেছিল কোনও পশু, তারই পায়ের ছাপ ভিজে মাটিতে পড়েছে। অনেকে ভাবছেন, এটি বাঘের পায়ের ছাপ, অনেকে আবার ভাবছেন ভালুকের, কেউবা ভাবছেন নেকড়ের।
জঙ্গলে অনেকেই কাঠ কুড়োতে যেতেন। কিন্তু এখন এই আতঙ্কে তাঁরা কাঠ কুড়োতে যেতে ভয় পাচ্ছেন। ভয়ে দিনেই কাজ সারছেন গ্রামবাসীরা। সূর্য ডুবলেই গৃহবন্দি তাঁরা। ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউই। পোষ্যদেরও গোয়ালে বেঁধে রাখছেন তাঁরা।
তবে এরই মধ্যেই এক ছাগলের দেহ উদ্ধার হয় এলাকা থেকে। সোমবার সকালেও নতুন করে পায়ের ছাপ দেখে আতঙ্ক আরও গাঢ় হয়। সোমবার সকালে জলাশয়ের ধারে পায়ের ছাপ দেখা যায়। অনুমান, ভোর রাতে জল খেতে এখানে এসেছিল পশুটি। রাতে বৃষ্টি হওয়ায় ভিজে মাটিতে পায়ের ছাপ স্পষ্ট প্রতীয়মান। গ্রামের এক বাসিন্দা ওই পশুটিকে এক ঝলক দেখতে পেয়েছিলেন বলে দাবি করছেন। তাঁর অনুমান, সেটি বাঘ হতে পারে।
বনদফতর গোটা বিষয়টার উপর নজর রাখছে। খাঁচা, নেট সমস্ত কিছুই প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পায়ের ছাপ, মৃত ছাগলের মৃতদেহ পাঠানো হয়েছে বিশেষজ্ঞদের কাছে। বিশেষজ্ঞরা কী বলেন? সেই অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেবে বনদফতর।
জন্তুর পায়ের ছাপ ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কুমিরকাতা, লক্ষ্মণপুর, শালবনিতেও। যদিও পায়ের ছাপ দেখে বন দফতরের প্রাথমিক অনুমান, এটি বাঘের পায়ের ছাপ নয়। তাঁদের দাবি, পায়ের ছাপগুলি হায়না জাতীয় কোনও প্রাণীর।
এর আগে ২০১৮ সালে লালগড়ে বাঘের দেখা মিলেছিল। বন দফতরের লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরায় সেই বাঘের ছবি ধরা পড়েছিল। কিন্তু এক বছরের মাথায় সেই বাঘটির দেহ উদ্ধার হয় ওই এলাকাতেই। স্থানীয়রাই বাঘটিকে শিকার উৎসবের ‘শিকার’ বানিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এক্ষেত্রেও যাতে বন্য প্রাণের ওপরেও কোনও হামলা না হয়, তার ওপর নজর রেখেছে বনদফতর।