খেমাশুলি: ৯৬ ঘন্টা পার। অধিকারের দাবিতে এখনও চলছে কুড়মি সমাজের আন্দোলন। প্রায় ৭২ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে রেলপথ। দাবি আদায় না হলে অনির্দিষ্টকাল ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাওবার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কুড়মি সমাজ। রীতিমতো দুর্ভোগের শিকার যাত্রীরা। শনিবার সাতসকালেও পশ্চিম মেদিনীপুরে খেমাশুলিতে রণপা সহযোগে ঢাক ঢোল পিটিয়ে মিছিল করেন কুড়মি সমাজে মানুষ। সি আর আই রিপোর্টের ওপর রাজ্য সরকারকে অবিলম্বে জাস্টিফিকেশন পাঠাতে হবে কেন্দ্রের কাছে, মূলত এই দাবি নিয়েই জাতীয় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছে কুড়মি সমাজ। একদিকে খড়্গপুরের খেমাশুলি, অন্যদিকে পুরুলিয়ার কুস্তাউরে অবরোধ কর্মসূচি চলছে।
এই আন্দোলনের জেরে শনিবারও বাতিল করা হয়েছে একগুচ্ছ দূরপাল্লার ট্রেন। দক্ষিণ পূর্ব রেল সূত্রে খবর, শনিবার প্রাথমিকভাবে বাতিল করা হয়েছে ৭২ টি দূরপাল্লার ট্রেন। একাধিক ট্রেনকে ঘুরপথে চালানো হচ্ছে। যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে বেশ কয়েকটি ট্রেনের। ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রেল। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুবনেশ্বর-দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস, লোকমান্য তিলক, শালিমার সহ বহু দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে অথবা যাত্রাপথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রেল ও সড়ক অবরোধের ফলে গোটা জঙ্গলমহল একেবারে স্তব্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শনিবার রেল অবরোধ চারদিনে পা দিল আর জাতীয় সড়ক অবরোধ চলছে পাঁচ দিন ধরে। আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও তীব্র করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কুড়মি সমাজের সামাজিক সংগঠনগুলি।
আদিবাসী কুড়মি জাতিকে তফশিলি উপজাতির তালিকাভুক্ত করা, সারনা ধর্মের স্বীকৃতি, কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করা-সহ রাজ্য সরকারের সিআরআই (কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট) রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানোর দাবিতে ১ এপ্রিল থেকে জঙ্গলমহলে শুরু হয়েছে ‘ঘাঘর ঘেরা’ নামের অবরোধ কর্মসূচি। তার জেরেই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।