মেদিনীপুর: মেদিনীপুর বিধানসভার উপনির্বাচনের পৌরসভার ২৫ টি ওয়ার্ডের মধ্যে সাতটি ওয়ার্ডে হার তৃণমূলের। আর তাতেই প্রকাশ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব। উল্লেখ্য মেদিনীপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে প্রায় ৩৪ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থী সুজয় হাজরা । তিনি একদিকে যেমন প্রার্থী ঠিক অপরদিকে জেলা তৃণমূলের সভাপতিও । মেদিনীপুর জেলায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার সঙ্গে বর্তমান সাংসদ জুন মালিয়ার অন্তর্কলহ এক রকম প্রত্যেকেরই জানা। মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রত্যেকের কাছ থেকে বারবার বার্তা এসেছে সকলকে এক সঙ্গে নিয়ে চলার । এ প্রশ্নই উঠছে বিধানসভার উপনির্বাচনের ফলাফলের পরে । তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজিরার বক্তব্য, হারের কারণ নিজেদের সাংগঠনিক কিছু দুর্বলতা , পাশাপাশি বর্তমান তৃণমূল পরিচালিত পৌরবোর্ডের অক্ষমতা ।
সুজয় হাজরা পরিষ্কার জানিয়েছেন, মানুষের কিছু অভাব অভিযোগ রয়েছে উন্নয়ন নিয়ে ওই সমস্ত ওয়ার্ডগুলিতে । প্রচারে যখন তিনি গিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ তাঁকে তাদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছিলেন । পাশাপাশি সাংগঠনিক কিছু দুর্বলতা রয়ে গেছে এলাকায়, তাই শহরের সাতটি ওয়ার্ডের মধ্যে যে পাঁচটি ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সেই পাঁচটি ওয়ার্ডেই এই হার বলে মনে করেন তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা । মেদিনীপুরের পৌরসভার যে ৭ টি ওয়ার্ডে তৃণমূল হেরেছে, তার মধ্যে পাঁচটি ওয়ার্ড তৃণমূলের দখলে এবং দুটি বামেদের দখলে । তৃণমূলের দখলের ওয়ার্ডগুলি হল ৪,৬,৭,৮,২০ । বামেদের দখলে ১০, ২৪ ।
তৃণমূলের দখলে থাকা ওয়ার্ডগুলি কাউন্সিলর জুন মালিয়া ঘনিষ্ঠ বলেই মেদনীপুর শহরে পরিচিত। মেদিনীপুর শহরের ওলিগলি কান পাতলে শোনা যায়, মেদিনীপুর শহরে পৌরসভার পরিচালনার ক্ষেত্রে একদিকে জুন মালিয়া গোষ্ঠী অন্যদিকে সুজয় হাজরার গোষ্ঠী, আড়াআড়িভাবে বিভক্ত । আর তাই প্রশ্ন উঠছে তারই কী প্রতিফলন ঘটল, এবারের বিধানসভার উপনির্বাচনে।
যদি বিগত দিনের লোকসভার নির্বাচনের নিরিখে বিচার করা যায় সে ক্ষেত্রেও দেখা যাবে মেদিনীপুর পৌরসভার বেশিরভাগ ওয়ার্ডেই হেরেছে তৃণমূল প্রার্থী, যে ওয়ার্ডগুলি আবার সুজয় হাজরা গোষ্ঠীর সমর্থিত লোকেরায় কাউন্সিলর । তাই ভোটের ফলাফলের নিরিখে বিচার করলে মেদিনীপুর শহরে জুন মালিয়া এবং সুজয় হাজরা গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বটা আরও একবার প্রকাশ্যে চলে আসে ।
ঠিক উল্টোদিকে বিজেপির জেলা মুখপাত্র অরূপ দাসের বক্তব্য, ভোট করিয়েছে পুলিশ তাই লোকসভা ভোটের নিরিখে বিজেপির খুব একটা ভালো ফল হয়নি মেদিনীপুর পৌরসভায়। পুলিশি হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন তিনি ।