Mentally and Physically Challenged: শিকল ভাঙা নতুন জীবন! TV9 বাংলার খবরের জেরে ২২ বছরের বন্দিত্ব ঘুচল যুবকের

TV9 Impact: ছোটোবেলায় মাথায় আঘাত লেগেছিল। সেই চোটের দায়ে যে একসময় পায়ে বেড়ি পরতে হবে তা হয়ত তখন ভাবতে পারেনি ছোট্ট শাহজাহান। এরপর দেখতে-দেখতে কেটে যায় বাইশটা বছর।

Mentally and Physically Challenged: শিকল ভাঙা নতুন জীবন! TV9 বাংলার খবরের জেরে ২২ বছরের বন্দিত্ব ঘুচল যুবকের
অবশেষে মুক্তি পেল শাহজাহান, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 17, 2021 | 7:56 PM

পশ্চিম মেদিনীপুর: TV9 বাংলার খবরের জের! ২২ বছরের বন্দি জীবন কাটিয়ে অবশেষে ছন্দে ফিরতে চলেছে প্রতিবন্ধী যুবক শাহজাহান মোল্লার পায়ের বেড়ি। মেদিনীপুরের সদর ব্লক উন্নয়ন অফিসের সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অফিসার চন্দন রজক-সহ প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকরা শুক্রবার প্রতিবন্ধী যুবকের বাড়িতে এসে পায়ের শেকল খুলে দেন।

এদিন, চন্দন রজক বলেন, “আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওই যুবকের প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও ওই যুবকের  চিকিৎসা-সহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে। ওই যুবকের যাতে কোনওরকম কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকেও বিশেষ নজর রাখা হবে।”

ছোটোবেলায় মাথায় আঘাত লেগেছিল। সেই চোটের দায়ে যে একসময় পায়ে বেড়ি পরতে হবে তা হয়ত তখন ভাবতে পারেনি ছোট্ট শাহজাহান। এরপর দেখতে-দেখতে কেটে যায় বাইশটা বছর। তবুও ঘুচল না বন্দিজীবন। কেউ জানতেই পারল ছোটো ছেলেটি কবে বড় হয়ে গিয়েছে। তবে বদলায়নি কিছুই।  তকমা জুটেছে ‘পাগল ছেলে’! মানসিক ভারসাম্যহীন।

কে এই শাহজাহান?

পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা বাবুয়া মোল্লা ও মর্জিনা বিবি। তাঁদের তিনটি সন্তান। দুই মেয়ে ও এক ছেলে। সংসারে ছেলেই বড়। একসময় রিক্সা চালিয়ে কোনও মতে সংসার চালিয়ে নিতেন বাবুয়া বাবু। কিন্তু বেড়েছে বয়স। তার উপর এখন আর রিক্সা সেভাবে চলে না। সংসার চালাতে অপারগ তিনি।

বাড়ির বড় ছেলে শাহজাহান। তার উপরই সংসারের দায়িত্বভার ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু সে তো সুস্থ নয়। ছোটবেলায় এক দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কে আঘাত লাগে। আর তারপরই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে ছোট্ট শাহজাহান। আর তার সঙ্গে-সঙ্গে যেন সব কিছুই অন্ধকারে হারিয়ে গেল।

এরপর বড় হয়েছে ছোট্ট শাহজাহান। বাইশে পা দিয়েছে সে। কিন্তু হাতে-পায়েই যেন বড় হয়েছে সে। শিশু সুলভ মানসিকতা আজও কাটেনি। এখন তাকে ধরে রাখা দায় পরিবারের। কারণ বাড়ির ‘পাগল ছেলে’  যেখানে-সেখানে দৌড়ে বেড়ায়। যখন-তখন পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা কাজ করে তার মধ্যে। তাই শাহজাহানকে শিকলে চাবি দিয়ে বাড়ি থেকে বের হন পরিবারের সদস্যরা।

আর চিকিৎসা? গরিব পরিবার। অত টাকা পাবে কোথায় যে ছেলের চিকিৎসা করাবে! আর্থিক সাহায্য মেলেনি কারোর কাছে। মেলেনি কোনও সরকারি সুবিধা।

শাহজাহানের বাবা বাবুয়া মোল্লা জানান, “ওর মাথা খারাপ। ছোটোবেলায় মাথায় চোট পায়। তারপর থেকেই এই অবস্থা হয়েছে। এখন ওকে বেঁধে রাখতে হয়। বাঁধন খুলে দিলে আর থাকে না। বেরিয়ে যায় বাইরে। কারোর সঙ্গে কোনও কথাও বলে না। প্রথম-প্রথম ডাক্তারও দেখিয়েছি। কিন্তু কোনও অসুধে কিছু কাজ হয়নি। এখন আমি, স্ত্রী কাজ করি। সরকারের কোনও সুযোগ-সুবিধা এখনও পাইনি। আবেদন থাকল যদি কিছু সাহায্য হয়।”

অবশেষে টিভি নাইন বাংলার খবরের জেরে শাহজাহানের নতুন জীবন শুরু হওয়ার মুখে। খুশির খবর এই যে, সঠিক চিকিৎসা পেলে ধীরে ধীরে সুস্থ হতে পারবে শাহজাহান। আনন্দে চোখে জল বাবুয়া মোল্লার। যাক, এ বার তো ছেলেটার নতুন জীবন মিলল!

আরও পড়ুন: Weather Update: পৌষের শুরুতেই বাংলার ‘হাড়ে হিম’ , সপ্তাহান্তে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে পারদ